সামাজিক মাধ্যমের ‘প্রোফাইল লক’ থাকলে মিলবে না মার্কিন ভিসা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এফ, এম ও জে ক্যাটাগরির শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা — সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল থাকতে হবে ‘পাবলিক’। নিরাপত্তাজনিত স্ক্রিনিংয়ের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে মালয়েশিয়ায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ভিসা চাইলে সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল ‘লক’ থাকলে চলবে না। কুয়ালালামপুরে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক ঘোষণায় জানিয়েছে, এখন থেকে মালয়েশিয়ান আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইল থাকতে হবে সর্বজনীন (পাবলিক)। নিরাপত্তা যাচাইয়ের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।
ঘোষণার বিস্তারিত: কী বলেছে মার্কিন দূতাবাস?
মার্কিন দূতাবাসের নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এফ (F), এম (M) এবং জে (J) ক্যাটাগরির নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃশ্যমানতা নিশ্চিত করতে হবে।
“আবেদনকারীদের প্রোফাইল পাবলিক করতে হবে যাতে আমরা তাদের পরিচয় ও কার্যকলাপ যাচাই করতে পারি”— জানিয়েছে দূতাবাস।
এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা এবং যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি আগেই শনাক্ত করা।
এমন সিদ্ধান্ত কেন?
২০১৯ সাল থেকেই মার্কিন সরকার ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহার করা ইউজারনেম জমা দেওয়ার নির্দেশনা চালু করেছে। তখন থেকেই নিরাপত্তার খাতিরে আবেদনকারীর ডিজিটাল কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হচ্ছিল।
তবে এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি প্রোফাইল পাবলিক রাখার নির্দেশনা এলো।
আগে অনেকেই তাদের প্রোফাইল ‘লক’ করে রাখতেন, যাতে বাইরের কেউ কিছু দেখতে না পারে। এখন এই সেটিংসই হয়ে উঠেছে ভিসা না পাওয়ার কারণ!
কারা প্রভাবিত হবেন এই সিদ্ধান্তে?
এই সিদ্ধান্ত প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়ান নাগরিকদের জন্য হলেও, এটি অন্য দেশেও প্রয়োগ করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা, স্কলারশিপ বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে যেতে চান, তাদের এখন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
“এটা শুধু মালয়েশিয়ানদের জন্য না, ভবিষ্যতে সব দেশের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে”— বলছেন অভিবাসন বিশ্লেষকরা।
এটি কতটা যৌক্তিক?
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই হয়ে উঠেছে একজন ব্যক্তির চিন্তাভাবনা ও কার্যকলাপ যাচাইয়ের অন্যতম মাধ্যম। তবে তারা এটাও মনে করছেন, এতে গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ হতে পারে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিষয়টিকে “নিয়ন্ত্রণমূলক” ও “ব্যক্তিস্বাধীনতা বিরোধী” বলে অভিহিত করেছে।
তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তারা সব তথ্য যাচাই করতে বাধ্য।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, কিছু সময়ের বিরতির পর এফ, এম ও জে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া আবারও শুরু হবে।
আবেদনকারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় ও অন্যান্য দিক যাচাই করে নেওয়ার জন্য।
ভবিষ্যতে আরও কঠোর স্ক্রিনিং চালু হতে পারে বলেও আভাস মিলছে। তাই প্রার্থীদের এখন থেকেই নিজেদের ডিজিটাল উপস্থিতি গুছিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
উপসংহার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার প্রোফাইল ‘লক’? তাহলে মার্কিন ভিসা পাওয়ার পথে তৈরি হতে পারে বড় বাধা।
এই নির্দেশনা শুধু ভিসা প্রার্থীদের জন্য সতর্কবার্তা নয়, বরং গোটা বিশ্বের ডিজিটাল গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে।
তবে প্রশ্ন হলো, প্রোফাইল খুলে দিলে সত্যিই কি সবাই নিরাপদ থাকবে?
এম আর এম – ০১২২, Signalbd.com