বিশ্ব

গাজ্জা দখলে কঠিন প্রতিরোধের ঘোষণা হামাসের

Advertisement

ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু উবাইদা এক নতুন বার্তায় বলেছেন, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে এবং তারা আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে অতুলনীয় বীরত্ব ও সাহসিকতার প্রদর্শন করছে। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাতে তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “ইনশাআল্লাহ, আমাদের যোদ্ধারা আগ্রাসীদের কঠিন শিক্ষা দেবে। আমরা তাদের কঠিন প্রতিরোধের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত”

গাজ্জায় উত্তেজনা ও সামরিক প্রস্তুতি

গাজ্জা উপত্যকায় এই মুহূর্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হামাসের মুখপাত্রের মতে, ফিলিস্তিনি বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত এবং শত্রুর যে কোনো আগ্রাসন পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে। তিনি জানান, “গাজ্জা দখলের যে কোনো শত্রু পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ইসরাইলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের জন্য ভয়াবহ বোঝা হয়ে দাঁড়াবে”

আবু উবাইদা আরও বলেন, ইসরাইলি সেনাদের জন্য শত্রুর দখল প্রচেষ্টা সহজ হবে না। যারা আক্রমণ করবে, তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে হবে, এবং নতুন বন্দি হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে। এটি ফিলিস্তিনিদের দৃঢ় সংকল্প ও যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের সাহসিকতার প্রমাণ দেয়।

ইসরাইলি নেতাদের কূটনীতি ও পরিকল্পনা

হামাসের মুখপাত্র জানান, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা জোর করে বন্দিদের সংখ্যা কমানোর এবং নিহত বন্দিদের লাশ গায়েব করার পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপকে তিনি “যুদ্ধাপরাধী কৌশল” হিসেবে আখ্যায়িত করেন। হামাস এসব পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রতি পূর্ণ দায়িত্বশীল। তিনি বলেন, “হামাস যতটা সম্ভব শত্রুর বন্দিদের সংরক্ষণ করবে এবং তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রেই থাকবে”

আবু উবাইদা বলেন, শত্রুর সেনারা যদি নিহত হয়, হামাস তাদের নাম, ছবি এবং মৃত্যুর কারণ প্রকাশ করবে। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে পৌঁছাবে যে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ অব্যাহত এবং স্বচ্ছ হবে।

আল-কাসসামের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা

আল-কাসসাম ব্রিগেডস ফিলিস্তিনে হামলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করছে। তারা কৌশলগতভাবে শত্রুর নিরাপত্তা, সেনা স্থাপনা এবং সরবরাহ লাইনকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। সম্প্রতি তারা উল্লেখ করেছে যে, “আমাদের যোদ্ধারা সর্বদা সর্বোচ্চ সতর্কতায় এবং মনোবলে রয়েছে”

মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেন, “আমাদের যোদ্ধারা শুধুমাত্র প্রতিরোধেই নয়, শত্রুকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ায়ও সক্ষম। তাদের সাহসিকতা এবং মনোবল বিশ্বের নজরকাড়া। প্রতিটি অভিযান আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং শত্রুর জন্য বিপজ্জনক”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবিক দৃষ্টিকোণ

ফিলিস্তিনে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া আসে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সংযুক্ত জাতিসংঘ ফিলিস্তিন ও ইসরাইল উভয়ের প্রতি সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি হামাসের পক্ষেও নজর রেখেছে, বিশেষত বন্দিদের নিরাপত্তা এবং যুদ্ধাপরাধের প্রতিরোধের বিষয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সামরিক প্রস্তুতি এবং কৌশলগত কার্যক্রম শুধু স্থানীয় সীমিত ঘটনা নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণ আন্তর্জাতিকভাবে তাদের স্বাধিকার এবং নিরাপত্তা দাবি করছে।

গাজ্জার সাধারণ মানুষের জীবন

গাজ্জায় চলমান উত্তেজনার প্রভাবে সাধারণ মানুষের জীবনেও চরম প্রভাব পড়েছে। বিদ্যুৎ, পানীয় পানি, চিকিৎসা সেবা এবং শিক্ষা কার্যক্রম সীমিত হয়েছে। অনেক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শহর থেকে বাইরে যাচ্ছে। মানবিক সংস্থাগুলি সতর্ক করে দিয়েছে, যদি পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তবে মানবিক সংকট আরও গুরুতর আকার নিতে পারে।

সামরিক বিশ্লেষণ

বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের কৌশল হল ছোট, গতিশীল দল ব্যবহার করে শত্রুর সেনা এবং সরবরাহ লাইনের ওপর আঘাত করা। এটি ইসরাইলের জন্য বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যখন ইসরাইলি সেনারা সরাসরি গাজ্জায় প্রবেশ করতে চায়। আল-কাসসামের এই কৌশল আন্তর্জাতিকভাবে নতুন ধরণের শহুরে যুদ্ধের উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি

আবু উবাইদা আরও সতর্ক করেছেন যে, যে কোনো শত্রু আগ্রাসন হলে তা ব্যর্থ হবে এবং ইসরাইলের নেতৃত্বের জন্য বড় রাজনৈতিক ও সামরিক বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলছেন, “আমরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাব এবং আমাদের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। শত্রুর প্রতিটি পরিকল্পনা আমরা ব্যর্থ করতে সক্ষম”

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে তাদের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংঘাতের দিকে চোখ রাখছে এবং মানবিক ও রাজনৈতিক সমাধানের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।

MAH – 12557,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button