দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম

বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে দুর্নীতির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্কোর ২৩, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
দুর্নীতির ধারণা সূচক
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো ইফতেখারুজ্জামান এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০২৪-এ ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ২৩, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এতে বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নক্রম অনুযায়ী ১৪তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।”
দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি
বাংলাদেশের এই স্কোর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় উদ্বেগজনক। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এটি পঞ্চম সর্বনিম্ন স্কোর। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমাদের দেশের দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে হলে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে হবে।”
আমলাতন্ত্রের প্রভাব
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও জানান, “আমলাতন্ত্রের বিষয়টি গত ৫৩-৫৪ বছরে গড়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সেটি হুট করে ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। এটি সময় সাপেক্ষ।” তিনি বলেন, “স্বার্থের দ্বন্দ্বের সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।”
স্কোরের বিশ্লেষণ
টিআইর সিপিআই সূচকের বিশ্লেষণ বলছে, ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ২৫ থেকে ২৮ এর মধ্যে ছিল। ২০২৩ সালে এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৪ এবং ২০২৪ সালে আরও এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৩ হয়েছে।
বাংলাদেশের অবস্থান
নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সর্বোচ্চ চারবার ১৩তম, তিনবার ১৪তম, দুইবার ১২তম এবং একবার করে ১৫, ১৬ ও ১৭তম। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০ম, যা দেশের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের দুর্নীতির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশের দুর্নীতির এই পরিস্থিতি দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারের উচিত দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একটি স্বচ্ছ ও সুশাসিত পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।