সরকারি স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে নতুন মাইলফলক: পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গতকাল রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমও উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বক্তব্য
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “ডিসিরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা জানি, বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আইন আছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই।”
ডিসিদের ইনপুট
অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান জানান, ডিসিদের কাছ থেকে পাওয়া ইনপুটের মধ্যে জনবলের অভাব এবং অবকাঠামোর কার্যকর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “কিছু জায়গায় ৫০০ শয্যার হাসপাতালে ১,২০০ রোগী ভর্তি রয়েছে। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার চাহিদা রয়েছে।” তিনি ডিসিদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া
বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “আমরা দেখেছি, এন্ট্রি পদে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসকের প্রয়োজন। মেডিকেল কলেজ ও ইউনিয়ন পর্যায়েও পদের ঘাটতি রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে পাঁচ হাজার পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু করেছি।” তিনি জানান, শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আহতদের চিকিৎসা নিয়ে যে অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, তা ১২-১৪ হাজার আহতের তুলনায় খুবই কম। অসন্তোষের মাত্রা ১ শতাংশও নয়।” তিনি জানান, ওষুধের ভেজাল রোধে সব জেলায় মিনি ল্যাব সম্প্রসারণের প্রয়োজন।
বিদেশে চিকিৎসা
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৪০ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।” তিনি জানান, “আমরা তাদের ট্রমা অ্যাড্রেস করতে পারছি না, তবে চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ ধীরে ধীরে কমে যাবে।”
সরকারের এই উদ্যোগ স্বাস্থ্যসেবা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণ হলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগের ফলে জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে, তা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।