কর্মসংস্থান

অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সুখবর: মালয়েশিয়া গ্রহণ করবে ১৮ হাজার কর্মী

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার ভিসা থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ করতে না পারা ১৮ হাজার শ্রমিককে আগামী মার্চ ও এপ্রিলের মধ্যে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।

শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে

সচিব রুহুল আমিন বলেন, “মালয়েশিয়া সরকার যদি বলে ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিক নেবে, তাহলে আমরাও ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে প্রস্তুত। তবে প্রক্রিয়াটি মালয়েশিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে সবকিছু দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শেষ হবে বলে আশা করছি। এরপর মার্চ-এপ্রিলে আমরা শ্রমিক পাঠানো শুরু করব।”

অগ্রগতির তথ্য এবং বৈঠকের আপডেট

রুহুল আমিন জানান, শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “মালয়েশিয়া আমাদের সঙ্গে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য শেয়ার করেছে। নীতিগতভাবে তারা আমাদের অনেক প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। আমরা আশা করছি, পরবর্তী ধাপে প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত হবে এবং ধাপে ধাপে শ্রমিকদের পাঠানোর কাজ শুরু হবে।”

বিক্ষোভ এবং সমস্যার পেছনের কারণ

এর আগে, ২০২৪ সালের ৩১ মে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা শ্রমিকরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।

এই সমস্যা সম্পর্কে সচিব বলেন, “প্রথমদিকে টিকিট জটিলতার কারণে শ্রমিকরা নির্ধারিত সময়ে যেতে পারেননি। তবে বর্তমান উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।”

মালয়েশিয়ার প্রতিশ্রুতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

২০২৪ সালের ৫ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক বিবৃতিতে বলেন, “মালয়েশিয়া সরকার ১৮ হাজার শ্রমিককে পুনরায় নেওয়ার জন্য সম্মত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অগ্রগতি।”

সচিব রুহুল আমিন বলেন, “আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে চাই, যা শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করবে। মন্ত্রণালয় পর্যায়ের আলোচনা শেষে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে।”

অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সরকারের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর এই উদ্যোগ অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় সুযোগ। সরকারের পদক্ষেপ শ্রমিকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বর্তমানে, প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ সরকার অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর চুক্তি শ্রমবাজারকে আরও উন্মুক্ত করবে এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে।

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সরকারের উদ্যোগ এবং মালয়েশিয়ার সহযোগিতার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হবে। দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং শ্রমিকদের জন্য সুষ্ঠু প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button