
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ১ ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন লেনদেন করতে কেউ কেউ অনীহা প্রকাশ করছেন, যা প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ধরণের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স (ডিসিপি) বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, কাগজী নোটের পাশাপাশি প্রচলিত সব ধরনের ধাতব মুদ্রা বৈধ এবং এগুলো নগদ লেনদেনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
নির্দেশনার প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ছোট মূল্যের কয়েনগুলো ব্যবহার না করার প্রবণতা কিছু এলাকায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এতে লেনদেন প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য অপ্রয়োজনীয় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
অতএব, জনগণকে নিয়মিতভাবে ধাতব মুদ্রা ব্যবহার করতে উৎসাহিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে করা হয়েছে স্পষ্ট উল্লেখ যে, ১ ও ২ টাকার কয়েন বৈধ এবং এগুলো প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে গ্রহণ করতে হবে।
কোষাধ্যক্ষের বক্তব্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “ধাতব মুদ্রা লেনদেন থেকে দূরে থাকা আইনত অনুমোদিত নয়। সকল ব্যবসায়ী এবং জনগণকে এটি মেনে চলতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চিত করতে চায়, লেনদেনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সহজ হবে। আমরা আশা করি, জনগণ নতুন নির্দেশনার প্রতি সচেতন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “১ ও ২ টাকার কয়েন নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে ছোট দোকান, হকার এবং গ্রামীণ এলাকায়। এটি ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সহজ এবং দ্রুততর করতে সাহায্য করে।”
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নতুন নির্দেশনার ফলে ছোট ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ উভয়ের জন্য লেনদেন সহজ হবে। বাজারে যে ছোট মূল্যের লেনদেনের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল, তা কমে আসবে।
কিছু ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, আগে ১ ও ২ টাকার কয়েন নিতে অনীহা থাকায় ছোট লেনদেনের সময় ঝামেলা হতো। তবে নতুন নির্দেশনার পরে আশা করা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীরা এই কয়েন গ্রহণে উৎসাহিত হবেন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এটি নগদ লেনদেনের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে এবং দৈনন্দিন ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া সহজ করবে।
জনগণের প্রতিক্রিয়া
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে ছোট মূল্যের কয়েন ব্যবহার না করার কারণে লেনদেনে অসুবিধা অনুভব করতেন। এক দোকানদার বলেন, “১ ও ২ টাকার কয়েন নাকচ করার প্রবণতা কমে গেলে আমাদের ছোট লেনদেন অনেক সহজ হবে। গ্রাহকরাও খুশি হবেন।”
শিক্ষার্থী এবং অফিস কর্মীরা জানিয়েছেন, নিয়মিত ধাতব মুদ্রা ব্যবহার আইনত বাধ্যতামূলক এবং এটি সমাজে অর্থনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।
সরকার ও অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ১ ও ২ টাকার কয়েন নগদ লেনদেনের জন্য অপরিহার্য। ছোট মূল্যমানের লেনদেন দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে এটি সহায়ক। এছাড়া, সরকারের আর্থিক নীতি অনুযায়ী, প্রচলিত সব মুদ্রা গ্রহণে বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
অর্থনীতিবিদরা আরও বলেন, নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে নগদ লেনদেনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আর্থিক সচেতনতা বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী ১ ও ২ টাকার কয়েন বৈধ এবং এটি নগদ লেনদেনে ব্যবহার করতে হবে। ছোট ব্যবসায়ী, হকার এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নির্দেশনার ফলে নগদ লেনদেনের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে এবং দৈনন্দিন ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া সহজ হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে অর্থনৈতিক লেনদেন আরও সুষ্ঠু হবে এবং জনগণকে তাদের অর্থ ব্যবহার ও সংরক্ষণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
এম আর এম – ১৭৯৬,Signalbd.com