
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা নিয়ে ভারত সরকারের নীরবতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসনেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি এই নীরবতাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং একই সঙ্গে আল-জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক হত্যার ঘটনাকেও সমালোচনা করেছেন।
প্রিয়াঙ্কার মন্তব্য
আজ মঙ্গলবার সকালে ‘এক্স’ হ্যান্ডলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পরপর দুটি পোস্ট করেন। তিনি আল-জাজিরার সাংবাদিক হত্যার ঘটনাকে ‘ঠান্ডা মাথার খুন’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “ক্ষমতা ও অর্থের কাছে বিশ্বের বেশিরভাগ গণমাধ্যম যখন ক্রীতদাস হয়ে রয়েছে, তখন এই সাহসী সাংবাদিকেরা আমাদের দেখালেন সৎ সাংবাদিকতা কেমন হওয়া উচিত।”
এক ঘণ্টা পর তিনি গাজায় গণহত্যার নীরবতায় ভারত সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন। প্রিয়াঙ্কা লেখেন, “ইসরায়েলের গণহত্যা অব্যাহত। ৬০ হাজার মানুষকে তারা ইতিমধ্যেই হত্যা করেছে, তাদের মধ্যে ১৮ হাজার ৪৩০ জন শিশু। অভুক্ত রেখে তারা শিশুসহ শয়ে শয়ে মানুষকে মেরে ফেলছে।”
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের প্রতিক্রিয়া
প্রিয়াঙ্কার সমালোচনার জবাবে ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার ‘এক্স’ মারফত দাবি করেন, “প্রিয়াঙ্কার প্রতারণা ও শঠতা লজ্জাজনক।” তিনি বলেন, “ইসরায়েল ২৫ হাজার হামাস সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। বাকিদের হত্যা করছে হামাসই। যাঁরা পালাতে চাইছেন, তাঁদের তারা হত্যা করছে।”
রেউভেন আজার আরও দাবি করেন, গাজায় ২০ লাখ টন খাদ্য পাঠানো হয়েছে, কিন্তু হামাস সন্ত্রাসীরা সেসব খাদ্য জব্দ করে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “গত ৫০ বছরে গাজার জনসংখ্যা ৪৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে কোনো গণহত্যা হচ্ছে না। হামাসের কথা বিশ্বাস করবেন না।”
প্রিয়াঙ্কার পূর্ববর্তী মন্তব্য
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এর আগেও গাজায় গণহত্যা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ‘ফিলিস্তিন’ লেখা ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেছিলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশ থেকে সমালোচনা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে পৃথক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় সেই স্বীকৃতি তাঁরা দেবেন। এর আগে ফ্রান্সও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা এবং সাংবাদিক হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মন্তব্য এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া এই সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ভারত সরকারের নীরবতা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকলে, এটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।
MAH – 12282 , Signalbd.com