আঞ্চলিক

রোববার সকালের মধ্যে ৮ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, পদ্মা নদীসহ আত্রাই, ছোট যমুনা ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠতে পারে। রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাবনা, মানিকগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে সাময়িক প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।

 বাংলাদেশের নদী সংলগ্ন আট জেলার নিম্নাঞ্চলে রোববার সকালে প্লাবনের সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। পদ্মা, আত্রাই, ছোট যমুনা ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পানি কিছুক্ষণের জন্য বাড়তে পারে, তবে পরবর্তী কয়েক দিনে নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল হতে পারে।

পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি

পদ্মা নদীর পানি সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকাল ৯টার মধ্যে পদ্মা নদীর পানি সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাবনা, মানিকগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ এবং ঢাকা জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।

যমুনা নদীর পানি সমতলেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যমুনা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বাড়তে পারে। তবে পরবর্তী চার দিনে পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর বর্তমান অবস্থা

রাজশাহী বিভাগের আত্রাই নদীর পানি নওগাঁ রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি ছোট যমুনা নদীর পানি সমতলও গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যা পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে নওগাঁ জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট ও রংপুর বিভাগের নদী পরিস্থিতি

সিলেট বিভাগের কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে সুরমা নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেয়েছে। আগামী তিন দিনে এই নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। মনু, ধলাই ও খোয়াই নদীর পানি সমতলও বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিনে স্থিতিশীল হতে পারে।

রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে, আর ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে। তৃতীয় দিন কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ভারি বৃষ্টিপাত ও সম্ভাব্য প্রভাব

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে চট্টগ্রাম বিভাগে এবং ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট ও রংপুর অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীর উজান থেকে আসা পানি নিম্নাঞ্চলগুলোতে সাময়িক প্লাবন সৃষ্টি করতে পারে।

আত্রাই, পদ্মা, যমুনা এবং ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলি জমি, বাড়ি-বাড়ি ও সড়কে পানি ঢুকতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

সরকারি ও স্থানীয় প্রস্তুতি

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্লাবন প্রভাবিত অঞ্চলে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মানুষকে নদীর তীরে না যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন নদী সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং এবং সতর্কবার্তা প্রদান করছে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

হাইড্রোলজি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নদীর পানি বৃদ্ধি অস্থায়ী হলেও নিম্নাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। তারা সুপারিশ করেছেন, বাড়ির নিচতলার মূল্যবান জিনিসপত্র ওপরে সরিয়ে রাখা এবং প্রয়োজনে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া।

সংক্ষিপ্তসার

রোববার সকালে পদ্মা, আত্রাই, ছোট যমুনা ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে আট জেলার নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। যদিও পরবর্তী কয়েক দিনে পানি সমতল স্থিতিশীল হতে পারে, তবুও স্থানীয়রা সতর্ক অবস্থায় থাকবেন। বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি কীভাবে মোড় নেবে তা পরবর্তী বৃষ্টিপাত এবং নদীর পানি সমতলের উপর নির্ভর করছে।

এম আর এম – ০৮৮৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button