যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ শুল্কযুদ্ধ: ঝুঁকিতে সাড়ে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য

আটলান্টিকের দুই পাড়ের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে তিক্ততা বাড়ছে। ইইউতে অ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্স (ক্তরাষ্ট্র-ইইউ শুল্কযুদ্ধ: ঝুঁকিতে সাড়ে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য) আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ শুল্কযুদ্ধের কারণে বছরে সাড়ে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথ কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা।
শুল্কযুদ্ধের কারণ ও প্রেক্ষাপট:
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইইউও একই ধরনের প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ থেকে আমদানি করা মদের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও, ট্রাম্প ইইউয়ের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি নিয়েও কথা বলেছেন। তবে বাস্তবতা হলো, ইইউয়ের সঙ্গে বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্র সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইইউতে বেশি পণ্য রপ্তানি হয়।
অর্থনীতির ওপর প্রভাব:
অ্যামচ্যাম ইইউয়ের আশঙ্কা, এই বাণিজ্য সংঘাতের কারণে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আটলান্টিকের দুই পাড়ের দুই মহাদেশের মধ্যে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। অ্যাপল, এক্সনমোবিল ও ভিসাসহ ১৬০-এর বেশি সদস্য নিয়ে গঠিত বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম অ্যামচ্যাম ইইউ মনে করে, চলতি বছরে বিশ্বের এই শীর্ষ বাণিজ্যিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে।
সম্ভাব্য পরিণতি:
এই বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। দুই পক্ষের মধ্যে যদি শুল্ক আরোপের প্রতিযোগিতা শুরু হয়, তবে তা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক:
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর মধ্যে এই বাণিজ্য সংঘাত তাদের দীর্ঘদিনের মিত্রতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আরও তিক্ত হলে, তা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশের ওপর প্রভাব:
যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ শুল্কযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক ও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তারা দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন।
উপসংহার:
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর মধ্যে এই বাণিজ্য সংঘাত বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা জরুরি।