বানিজ্য

আপেল ও আঙুরসহ বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানিতে শুল্ক কমলো

আপেল, আঙুর, নাশপাতি, কমলা ও মাল্টাসহ বিভিন্ন ধরনের তাজা ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক কমিয়েছে সরকার। এসব ফল আমদানিতে ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে এসব ফলের দাম কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অবিলম্বে তা কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সম্পূরক শুল্কের সুবিধা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আমদানিকারকরা পাবেন।

আদেশে বলা হয়, সরকার মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সালের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কাস্টমস আইন, ২০২৩ (২০২৩ সালের ৫৭ নং আইন) এর প্রথম তফসিলভুক্ত পণ্যসমূহের মধ্যে নিম্নবর্ণিত পণ্যসমূহের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করলো।

যেসব ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক কমানো হলো- তাজা বা শুকনা কমলালেবু, তাজা বা শুকনা লেবু জাতীয় ফল, তাজা বা শুকনা আঙুর, তাজা বা শুকনা লেবু, তাজা আপেল ও নাশপাতি।

গত ৯ জানুয়ারি আমদানি করা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছিল। ফলে বাজারে আমদানি করা বিদেশি ফলের দাম বেড়ে যায়।

বর্তমানে ফল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর, ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আগাম কর রয়েছে।

শুল্ক কমানোর প্রভাব:

সরকারের এই শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত বিভিন্ন মহলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ভোক্তা অধিকার সংস্থাগুলো এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, এর ফলে বাজারে ফলের দাম কমে আসবে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

আমদানি কারক সমিতির নেতারাও এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, শুল্ক কমানোর ফলে আমদানি বাড়বে এবং বাজারে ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই শুল্ক কমানোর ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং ভোক্তারা কম দামে ভালো মানের ফল কিনতে পারবে।

শুল্ক কমানোর কারণ:

সরকার মূলত দুটি কারণে এই শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, রমজান মাসে ফলের চাহিদা বেড়ে যায় এবং বাজারে ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বাজারে ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শুল্ক কমানোর সম্ভাব্য ফলাফল:

  • বাজারে ফলের দাম কমে আসবে।
  • আমদানি বাড়বে এবং বাজারে ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।
  • ভোক্তারা কম দামে ভালো মানের ফল কিনতে পারবে।
  • বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে।
  • সরকারের রাজস্ব আয় কিছুটা কমতে পারে।

শুল্ক কমানোর সমালোচনা:

কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এই শুল্ক কমানোর ফলে স্থানীয় ফল চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তারা মনে করেন, সরকারের উচিত স্থানীয় ফল চাষিদের উন্নয়নে আরও বেশি নজর দেওয়া।

উপসংহার:

সরকারের এই শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত বাজারে ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, এর পাশাপাশি স্থানীয় ফল চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button