চালের দাম কমালো ভারত, বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর কী লাভ

ভারতে চালের রপ্তানি মূল্য এখনো ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। দেশটিতে চালের রপ্তানি মূল্য কমে আসার পেছনে মূল কারণ হলো চাহিদা কমে যাওয়া এবং অন্যান্য চাল রপ্তানিকারক দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়া।
রপ্তানি মূল্যের বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে ভারতে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সেদ্ধ চালের রপ্তানি মূল্য চলতি সপ্তাহে টনপ্রতি ৪০৩-৪১০ ডলার নির্ধারণ হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০৯-৪১৫ ডলার। ভারতের সংবাদমাধ্যম লাইভ মিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশের চালের রপ্তানি মূল্য কমে যাওয়ার কারণে ভারতের চালের দামও কমেছে।
উৎপাদন সংকট ও রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা
২০২২ সালে ভারতে কম বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদনসংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ফলে সে বছরের সেপ্টেম্বরে দেশটির সরকার বাসমতী ভিন্ন অন্যান্য চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। ২০২৩ সালে অন্যান্য চাল রপ্তানির ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তবে পরবর্তী সময়ে রেকর্ড ফসল উৎপাদনের ফলে সরবরাহ পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় চাল রপ্তানির বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া শুরু হয়।
বিকল্প সরবরাহকারীদের দিকে ক্রেতাদের ঝোঁক
ব্যবসায়ীদের মতে, ক্রেতারা বিকল্প সরবরাহকারীদের কাছ থেকে চাল কিনতে শুরু করেছে, যা ভারতের চালের দামের ওপর চাপ তৈরি করেছে।
ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের চালের দাম
ভিয়েতনাম ফুড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দেশটিতে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম ছিল টনপ্রতি ৩৯২ ডলার, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৮৯ ডলার। থাইল্যান্ডে চলতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম ৪১৫ ডলার থেকে কমে ৪০৫-৪০৮ ডলার হয়েছে।
ভারতের চাল রপ্তানির গুরুত্ব
ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ, যা বিশ্ববাজারের প্রায় ৪০ শতাংশ চাল সরবরাহ করে। চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের পরের চারটি অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে এই চারটি দেশ সম্মিলিতভাবে যত চাল রপ্তানি করে, ভারত একাই তার চেয়ে বেশি করে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে ভারত চাল রপ্তানি থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর থেকে বিশ্ববাজারে চালের দাম কমতে থাকে। তবে বাংলাদেশে শীত মৌসুম থেকেই চালের দাম বাড়তি রয়েছে, যা বিভিন্ন দেশে থেকে আমদানি করা হলেও দাম কমছে না।