গরুর মাংস না পেয়ে মুরগি ও ডিম নিয়ে ফিরলেন ফজিলাতুন্নেছা

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে সুলভ মূল্যে গরুর মাংস কেনার জন্য আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় আসেন ষাটোর্ধ্ব ফজিলাতুন্নেছা বেগম। আধা ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষার পর পণ্য কেনার সুযোগ পেলেও গরুর মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়। ফলে তিনি শুধু মুরগি ও ডিম নিয়েই বাসায় ফিরেন।
আজ রোববার খামারবাড়িতে ফজিলাতুন্নেছার মতো আরও অন্তত ৩০ জন গরুর মাংস কিনতে পারেননি। প্রায় ১৫ জন একদমই কোনো পণ্য না কিনতে পেরে ফিরে গেছেন।
ফজিলাতুন্নেছার অভিজ্ঞতা
ফজিলাতুন্নেছা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, “সারা বছর তো সেভাবে গরুর মাংস খেতে পারি না। এখন রোজা শুরু হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ভালো কিছু খেতে চায়।” তিনি জানান, “এখানে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি হয় শুনে এসেছিলাম। কিন্তু আমার সিরিয়াল আসার আগেই গরুর মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়।”
বিক্রয় কার্যক্রম
পবিত্র রমজান উপলক্ষে ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে সুলভ মূল্যে পাস্তুরিত গরুর দুধ, ফার্মের মুরগির ডিম, ড্রেসড (চামড়া ছাড়া) ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২৮ রমজান পর্যন্ত এ বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।
প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, চামড়া ছাড়া (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১৪ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একজন ভোক্তার সব মিলিয়ে ১ হাজার ৯৪ টাকা লাগছে, যা বাজার থেকে কিনতে হলে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি লাগত।
বিক্রির পরিসংখ্যান
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন ৬০ হাজার পিস ডিম, ৬ হাজার লিটার পাস্তুরিত দুধ, ২ হাজার কেজি চামড়া ছাড়া (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি ও দুই থেকে আড়াই হাজার কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছে।
গত পরশু থেকেই এই বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। গত দুই দিনের অভিজ্ঞতা থেকে আজ সকাল ১০টার পরই এসব পণ্য নেওয়ার জন্য লোকজন জড়ো হন। খামারবাড়িতে পণ্য বিক্রি করা গাড়ির হিসাবরক্ষক মোকাদ্দাস ইসলাম বলেন, “আমাদের গাড়ি এখানে আসার আগেই ৪০ থেকে ৫০ জনের লাইন ছিল। গাড়ি দাঁড়ানোর পর সেটি আরও দীর্ঘ হয়। আজ গাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ জন পণ্য কিনতে পেরেছেন। মোটামুটি ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময়ের মধ্যে সব পণ্য বিক্রি শেষ হয়েছে।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই কার্যক্রমে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ), দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজন ও প্রান্তিক খামারিরা সহযোগিতা করছেন।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, রমজান মাসে বাজারে মাছের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল থাকায় আলাদাভাবে মাছ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়নি। বিএফডিসির বিক্রয়কেন্দ্রে সামুদ্রিক মাছ, কাপ্তাই লেক থেকে আহরিত রেডি টু কুক ফিস বা রান্নার জন্য প্রস্তুত মাছ পাওয়া যাবে।