বাংলাদেশ থেকে সৌদি ও আমিরাতে ১১ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি

বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসীদের জন্য ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এই তথ্য জানান।
ইলিশ রপ্তানির পটভূমি
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, ২০১২ সাল থেকে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ ছিল। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষের জন্য ইলিশ সরবরাহ বাড়ানো এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সচেষ্ট রয়েছে।
প্রবাসীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ
ফরিদা আখতার বলেন, “বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তাঁরা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সময়ে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত আকারে ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “সারা বছর ইলিশ পাঠানো সম্ভব না হলেও, অধিক ইলিশপ্রাপ্তির সময় আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীদের জন্য ইলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”
প্রবাসী কর্মীদের সংখ্যা
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবে প্রায় ৪৪ লাখ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মজীবী রয়েছেন। এই বিশাল সংখ্যক প্রবাসীর জন্য ইলিশ রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
রপ্তানির পরিকল্পনা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিকভাবে এই দুটি দেশে মোট ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে। চলতি বছরের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই রপ্তানি কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর অন্যান্য দেশে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
বাংলাদেশের ইলিশ মাছ বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইলিশ রপ্তানি করার মাধ্যমে সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং প্রবাসীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সরবরাহ করবে। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নেও সহায়ক হবে।