বানিজ্য

দাম কমেছে আকরিক লোহার

Advertisement

আন্তর্জাতিক রপ্তানিমূলক বাজারে আকরিক লোহা-র দাম হঠাৎ করে কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে চীনের স্টীল শিল্পে চাহিদার স্থিতিশীলতা না থাকায় এবং মূল সরবরাহকারীরা অতিরিক্ত স্টক চালাতে থাকায় বাজারে চাপ বেড়েছে। এ কারণে টনপ্রতি দাম একটু নিচে নামছে, যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন নির্মাণ ও রপ্তানি-শিল্পেও প্রভাব ফেলতে পারে।

ঘটনা-বিস্তর

চীনের দালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে জানুয়ারি মেয়াদি আকরিক লোহার চুক্তি টনপ্রতি ৭৭৩ ইউয়ান বা প্রায় ১০৮.৫২ মার্কিন ডলারে লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে এটি প্রায় ২.৮ প্রতिशत কমেছে। একই সময় সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জে নভেম্বর মেয়াদের বেঞ্চমার্ক ডলারে টনপ্রতি ১০৪.৬ ডলারে ০.৩১ প্রতিশত কমেছে, যা সপ্তাহভিত্তিতে মোট ১.৭ প্রতिशत পতন।
এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক ও সংবাদমাধ্যমে।

আকরিক লোহার মূল ভোক্তা দেশ হলো চীন, যা বিশ্বের সীমানা পার্থক্যসহ স্টীল শিল্পের বড় অংশ। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে চীনের স্টীল উৎপাদন ও রপ্তানিতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা আকরিক লোহা-বাজারে সরাসরি প্রতিফলিত হয়েছে।
অতিরিক্তভাবে, নতুন বড়-মাপের খনি ও রপ্তানির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলায় সরবরাহ দিক থেকে ভবিষ্যতে দাম-চাপ বাড়তে পারে। 

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশে নির্মাণ খাত ও স্টীল শিল্প প্রতিমুহূর্তে আকরিক লোহা ও স্টীল বার-র জন্য নির্ভরশীল। আকরিক লোহার দাম কমলে প্রথমচলায় নির্মাণ ও রপ্তানিতে উপকার হতে পারে — কাঁচামালের ব্যয় কমে আসতে পারে। তবে, নিম্নমানের লোহা বেশি হলে নির্মাণ মানে বা প্রসেস খরচে অন্যান্য ঝামেলা বাড়তে পারে।
স্টীল কারখানাগুলোর স্থিতিশীল চাহিদা থাকায় খনি ও রপ্তানিকারকদের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এক বিশ্লেষক জানিয়েছেন, “চাহিদা কমে গেলে খরচ কমানো ছাড়া বিকল্প নেই।”

পরিসংখ্যান ও তুলনা

  • চীনের পোর্টে প্রদর্শিত মূল ৬২ % Fe আকরিক লোহার দাম জুলাই থেকে আগস্টে প্রতি টন ৯৩.০৫ ডলারে থেকে উঠেছে সেপ্টেম্বরের দিকে প্রায় ১০৭ ডলারে।
  • ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ সালে বিশ্ববাজারে আকরিক লোহার মাঝারি রূপে সরবরাহ উদ্বেগে রয়েছে, কিন্তু চাহিদা কম বলেই দাম বাড়ার সম্ভাবনা সীমিত।

বিশ্লেষণ

অবস্থা দেখলে বোঝা যায়, দাম কমে যাওয়ার মূল কারণ হলো — সরবরাহ বাড়ছে ও চাহিদা বেশিরভাগ বাজারে আগের মতো না বাড়ায়। চীনের রিয়েল এস্টেট ও অবকাঠামো খাতে ধীরগতি চালু থাকায় আকরিক লোহা-চাহিদায় মন্থরতা এসেছে।
বাংলাদেশের জন্য এটি একটি সুযোগ হতে পারে কাঁচামালের খরচ কমানোর জন্য। তবে, খারাপ মানের লোহা বেশি হলে প্রসেসিং খরচ বাড়তে পারে — তাই স্টীল কারখানাগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে সরবরাহ বাড়বে বলে দাম খুব দ্রুত বাড়ার সম্ভাবনা কম বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

আকরিক লোহার খাতে চলমান এই মূল্যে পতন বাংলাদেশের নির্মাণ ও স্টীল খাতে কাঁচামালের ব্যয় কমানোর দিকে এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু চ্যালেঞ্জও রয়েছে — মানের রক্ষা, সময়মতো সরবরাহ ও বাজারের উঠানামা। ভবিষ্যতে কীভাবে দাম ঘুরে দাঁড়াবে তা নির্ভর করবে চীনের চাহিদা ও বড়-খনি রপ্তানির গতির ওপর। নির্মাণ ও রপ্তানিকারীদের উচিত এই মুহূর্তে পরিকল্পনা নেওয়া ও ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া।

এম আর এম – ১৮৪৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button