বানিজ্য

ভারত থেকে ২১৯ কোটি টাকায় ৫০ হাজার টন চাল কিনছে সরকার

Advertisement

সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন প্যাকেজড সিদ্ধ চাল আমদানি করবে। এই ক্রয়ে ব্যয় হবে প্রায় ২১৯ কোটি টাকা। সরকারি মজুত বাড়ানো এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই মূল উদ্দেশ্য।

সরকারি সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন

মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে প্যাকেজ-১ এর আওতায় এই চাল কেনা হবে।

প্রতি মেট্রিক টনের দাম নির্ধারিত হয়েছে ৩৫৯.৭৭ মার্কিন ডলার, যার ফলে মোট ব্যয় হবে ২১৯ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা।

সরকার প্রতি বছর দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল ও অন্যান্য খাদ্যশস্য আমদানি করে। স্থানীয় উৎপাদন ও মজুতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এসব ক্রয় করা হয়। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের খাদ্য মজুত আরও বৃদ্ধি পাবে, যা অপ্রত্যাশিত সঙ্কট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

চলতি অর্থবছরে, সরকারের খাদ্য মজুত ও গুদাম ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার অংশ হিসেবে চালের আমদানি করা হচ্ছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির আওতায় গম আমদানিও করা হয়েছে।

প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা

দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য সরকারি মজুত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিশেষ ধরনের সিদ্ধ চালের জন্য ভারত অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী। এই আমদানির ফলে স্থানীয় বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “সরকারি মজুত বৃদ্ধি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

অন্যান্য খাদ্যশস্য ও প্রকল্প

সভায় শুধুমাত্র চাল নয়, সার ও গমের আমদানিরও অনুমতি দেয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাগ্রোক্রপ ইনটারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। প্রতি টনের দাম ৩০৮ মার্কিন ডলার।

এছাড়াও, স্থানীয় সরকার বিভাগের ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রস্তাবও সভায় অনুমোদিত হয়েছে। এটি সরকারের বৃহত্তর উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিবেচিত।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের ওঠাপড়া এবং স্থানীয় উৎপাদনশীলতার সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় এই ধরনের আমদানি গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে নিয়মিতভাবে নির্ধারিত পরিমাণে চাল ও গম আমদানিতে নজর দিতে হবে।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি দর নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। বিশেষ করে খোলা বাজারে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে চাল ক্রয় দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং মজুত ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। ভারত থেকে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানি করে খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে এবং বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও খাদ্য চাহিদা বিবেচনায় এই পদক্ষেপ সময়োপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।

এম আর এম – ১৬৬৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button