বানিজ্য

হিলি দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ ভারতীয় চাল আমদানি, কমছে বাজার মূল্য

Advertisement

দেশের অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর হিলি দিয়ে ভারত থেকে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) একদিনেই হিলি বন্দরে পৌঁছেছে প্রায় ৫ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন ভারতীয় চাল, যা এই বন্দর দিয়ে একদিনে আমদানি হওয়া সর্বোচ্চ পরিমাণ হিসেবে রেকর্ড করা হলো।

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং দেশের বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার নিয়মিত ভারত থেকে চাল আমদানি করে। চলতি বছরের এই আমদানি, বিশেষ করে সরু জাতের চালের বড় পরিমাণ, স্থানীয় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

চালের দাম কমেছে বাজারে

হিলি বন্দরে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চালের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি শম্পা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৭–৬৮ টাকায়, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকায়, এবং মোটা জাতের স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০–৫১ টাকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমদানি বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে আসছে, যা সাধারণ ক্রেতা ও পাইকারী ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে হাসি

বাজারে চালের দাম কমে আসায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারী ক্রেতারা হিলি বন্দরে পৌঁছাচ্ছেন। বেচা-কেনার কার্যক্রম গতিশীল হয়ে উঠেছে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে খুশির ছাপ দেখা গেছে। বিশেষ করে সরু জাতের চালের আমদানি বেশি হওয়ায় পাইকারিদের কাছে এটি লাভজনক অবস্থান সৃষ্টি করেছে।

মোটা জাতের চালের আমদানি তুলনামূলকভাবে কম হলেও সরু জাতের চালের বড় পরিমাণে আমদানি দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করছে। এতে করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে এবং সাধারণ মানুষও সাশ্রয়ী মূল্যে চাল পেয়ে যাচ্ছেন।

ভারত থেকে চাল আমদানির প্রভাব

ভারত বাংলাদেশের প্রধান চাল সরবরাহকারী দেশ। বিশেষ করে হিলি স্থলবন্দর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও ঢাকা-মহাসড়ক সংলগ্ন অঞ্চলে চালের প্রধান রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। চলতি বছর ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে উচ্চমানের চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে সরু জাতের চাল সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে, যা সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।

চাল আমদানির ফলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা এবং বাজার স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সহজ হয়েছে। সরকার নিয়মিত আমদানির মাধ্যমে বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য নিশ্চিত করছে।

সরকারি নীতি ও বাজার প্রভাব

বাংলাদেশ সরকার খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে আমদানি নীতিকে গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ভারত থেকে উচ্চমানের চালের নিয়মিত আমদানি
  • পাইকারী এবং খুচরা বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা
  • স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে বাজারে অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি রোধ করা

এই নীতিমালার কারণে বাজারে দাম স্থিতিশীল হয়েছে এবং ক্রেতারা স্বস্তিতে চাল কিনতে পারছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা

হিলি বন্দরে সরাসরি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, “আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা পাইকারি ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারছি। বিশেষ করে সরু জাতের চালের বিক্রি বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুশি।”
এছাড়া, খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, “চালের দাম কমায় সাধারণ মানুষও বেশি পরিমাণে চাল কিনতে পারছে। এতে বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় আছে।”

ভবিষ্যৎ প্রভাব ও সরবরাহ পরিকল্পনা

বিশেষজ্ঞদের মতে, হিলি বন্দরে এমন বড় পরিমাণে ভারতীয় চাল আমদানি দেশের চাল ঘাটতি হ্রাস ও বাজার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। আগামী মাসগুলোতে যদি এই আমদানি ধারাবাহিক থাকে, তাহলে দেশের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য আরও ভালোভাবে বজায় থাকবে।

সরকার ইতিমধ্যেই আমদানি এবং সরবরাহ প্রক্রিয়ার জন্য বিশেষ মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে করে বাজারে অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি, কৃত্রিম সংকট বা অভাব রোধ করা সম্ভব হবে।

সংক্ষেপে

  • হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একদিনে ৫৬৫০ মেট্রিক টন ভারতীয় চাল আমদানি
  • সরু জাতের চালের আমদানি সবচেয়ে বেশি।
  • পাইকারী বাজারে চালের দাম কমেছে: শম্পা চাল ৬৭–৬৮ টাকা, মিনিকেট ৬২ টাকা, স্বর্ণা চাল ৫০–৫১ টাকা।
  • দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারী ক্রেতারা হিলি বন্দরে আসছেন।
  • বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আছে।
  • সরকারের আমদানি নীতি খাদ্য নিরাপত্তা এবং বাজার স্থিতিশীলতায় সহায়ক।

চাল আমদানি ও বাজারের এই পরিবর্তন দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের নিয়মিত আমদানি এবং বাজার পর্যবেক্ষণ দেশের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য নিশ্চিত করছে।

MAH – 12537 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button