ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দামে অস্থিরতা

ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারেও। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে এক লাফে ৯ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি দেখা গেছে।
কীভাবে তেলের দাম বেড়েছে?
- ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস: প্রতি ব্যারেল ৭৫.৬৫ ডলারে পৌঁছেছে, যা ৬.২৯ ডলার বা ৯.০৭% বৃদ্ধি। একপর্যায়ে দাম পৌঁছে যায় ৭৮.৫০ ডলারে — ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
- WTI (ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট): প্রতি ব্যারেল ৭৪.৪৭ ডলারে, যা ৬.৪৩ ডলার বা ৯.৪৫% বেড়েছে। সর্বোচ্চ ৭৭.৬২ ডলারে ওঠে — ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
কেন বাড়ছে দাম?
বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাই দাম বাড়ার মূল কারণ। এই জলপথ দিয়েই বিশ্বে দৈনিক ২০% তেল সরবরাহ হয়। ইরান যদি এই প্রণালিতে বা উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল পরিকাঠামোতে হামলা করে, তবে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।
কার প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি?
জ্বালানির দাম বাড়লে তার প্রভাব পড়ে খাদ্যদ্রব্য, পরিবহন ব্যয়, গাড়ির জ্বালানি ও দৈনন্দিন পণ্যের দামে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
- ইরান: ইসরায়েলের হামলার কঠোর জবাবের ঘোষণা দিয়েছেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
- যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এ হামলায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে তেহরানকে হুঁশিয়ার করেছেন যেন মার্কিন স্বার্থে আঘাত না আসে।
বাজার বিশ্লেষকদের মত
- সল কাভোনিক (এমএসটি মারকুই): পরিস্থিতি চরমে গেলে তেল সরবরাহে বড় ধাক্কা লাগতে পারে।
- প্রিয়াঙ্কা সচদেবা (ফিলিপ নভার): ইরান পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা সামগ্রিক মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জ্বালানি সরবরাহকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত বিশ্ব জ্বালানি বাজারে বড় অস্থিরতা তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে এই উত্তেজনা আরও তীব্র হলে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।