রাজনীতি

“আন্দোলনরত ৮ দলের পারস্পরিক সংহতি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে”

Advertisement

Mufti Syed Muhammad Rezaul Karim (চরমোনাই পীর) বলেছেন, চলমান আন্দোলনরত আট‑দলের মধ্যে যে পারস্পরিক সংহতি এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে, তা রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাধুর্যময় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এই প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, “অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে যে দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে এই সমাবেশগুলো আয়োজন করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, শুধু একটি দলের নয় — পুরো আটদলের উৎসাহ এবং ভক্তি আমাদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছে।”

চরমোনাই পীর আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কোন বিরতি ছাড়াই দেশের আট প্রান্তে ছুটে গেছেন; স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে দৃষ্টিনন্দন, প্রভাববিস্তারী সমাবেশ আয়োজন করেছেন। এই দৃশ্যই ৮ দলের একতা এবং সাংগঠনিক সক্ষমতার প্রমাণ।”

যুবসৈনিক ও জনসাধারণকে ধন্যবাদ — সমাবেশে অংশগ্রহণ: নিন্দা থেকে উদ্দীপনা

চরমোনাই পীর সমাবেশে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ এবং নেতা-কর্মীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমরা যে ৫ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছি — সেই দাবি পেয়েছে জনমানসের অকুণ্ঠ সমর্থন। প্রতিটি সমাবেশে যে উৎসাহ এবং উদ্দীপনায় মানুষ অংশ নিয়েছে, তা প্রমাণ করেছে — আমাদের দাবি ছিল সমাজের সাধারণ মানুষের আর্জি এবং আশা। এটি আগামীর বাংলাদেশ গঠনের জন্য জাতির প্রতিশ্রুতি।”

তিনি জনসাধারণকে অভিনন্দন জানিয়ে আরও বলেন, “আপনাদের এই সমর্থন আমাদের সংগ্রামে নতুন শক্তি যোগাবে, নতুন উৎসাহ দেবে।”

সেই সাথে তিনি স্থানীয় ও জাতীয় সাংবাদিক, প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতা ও উপস্থিতির জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।

সরকারের প্রতি আহবান: “জনতার ভাষা বুঝুন — গণভোট ও নির্বাচন আলাদা করুন”

চরমোনাই পীর সরকারের প্রতি স্পষ্ট আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন — “দয়া করে জনতার ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। সারাদেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি করছে — জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট একসঙ্গেই নয়, আলাদা দিনেই করুন।”

তিনি এরপর বলেন, “আমরা দেখেছি, গণভোটে এবং নির্বাচনে যে জনমত তৈরি হয়েছে, সেটি স্পষ্ট। যারা গণভোটের পক্ষে, যারা জনগণের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিচ্ছে — তাদের দিক থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমাদের ৫ দফা দাবি স্বীকৃতি দিন।”

পীর আরও জানান, “ফ্যাসিবাদের বিচার এবং তাদের দোসরদের দণ্ড নির্ধারণ, পিআরের পক্ষে জনমতের প্রতিশ্রুতি — এগুলো আগামীর বাংলাদেশ গঠনে অপরিহার্য। তাই সরকারের দিকেও অনুরোধ — আপনি জনমতের দিকে খেয়াল রাখুন, জনগণের কথা শুনুন।”

প্রেক্ষাপট: ৫‑দফা দাবি ও আটদলের আন্দোলন

গত কয়েক মাস ধরে, Bangladesh Jamaat-e-Islami, Islami Andolan Bangladesh এবং অন্যান্য ছয় সহমতিপূর্ণ দল — মোট আট দল — একটি যৌথ আন্দোলন চালাচ্ছে। তারা একটি ৫‑দফা দাবি বিশিষ্ট আন্দোলন ঘোষণা করেছে।

তাদের দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে:

  • July National Charter এর আদেশ জারি করা।
  • জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি গণভোট (রেফারেন্ডাম) আয়োজন।
  • উভয় সংসদে প্রাতিনিধিক ব্যবস্থাপনায় (Proportional Representation, PR) ভোট প্রদানের দাবি।
  • একটি level playing field — অর্থাৎ সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ এবং সংখ্যালঘু‑প্রধান দলকে অস্বার্থভাবে ক্ষমতায় আসা থেকে বিরত রাখতে হবে।
  • অতীত সরকারের alleged mass killing, নির্যাতন, বিচারি অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃষ্টিগোচর বিচার।

এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, আটদল যৌথভাবে একাধিক পর্যায়ের সমাবেশ, স্মারকলিপি দাখিল এবং জনসভা–মিছিল করেছে।

বিশেষ করে, রাজধানী ঢাকায় এবং দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সমাবেশ হয়েছে — যেখানে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।

রাজনৈতিক মানচিত্রে ৮‑দলের প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ দৃষ্টিকোণ

গত কয়েক মাসে ৮‑দলের আন্দোলন, তাদের demands এবং mass mobilisation — সবকিছুই রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নজরকাড়া হয়ে উঠেছে।

একদিকে, তারা দাবি করছে যেভাবে জাতীয় রাজনৈতিক কাঠামা পরিবর্তন প্রয়োজন — July Charter বাস্তবায়ন, PR ভোট, level playing field, এবং গণভোট। এই দাবি গুলো কেবল দলের স্বার্থ নয়, বলা যায় — একটি জাতীয় আন্দোলন।

অন্যদিকে, তাদের এই আন্দোলনকে কতটা গণমান্যতা পাওয়া যাচ্ছে — তা এই সমাবেশ ও জন সমর্থন দেখিয়ে দিয়েছে। চরমোনাই পীরের কথায়, “প্রতিটি সমাবেশে দেশজুড়ে উৎসাহ ও উদ্দীপনা” ভিড় ছিল, যা প্রমাণ করে — এই আন্দোলন আর শুধুই দলের নয়; জনতার চাকুমুক্তি, প্রতিশ্রুতি, আশা ও আস্থা নিয়ে।

এই পরিবর্তন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একটি নতুন গতি আনতে পারে — যদি সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান জনগণের কথা গুরুত্ব দেয়।

চরমোনাই পীরের বার্তা — ভবিষ্যতের দিকে

চরমোনাই পীরের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট — এই আন্দোলন কেবল বর্তমান ৫‑দফা দাবির জন্য নয়, আগামী বাংলাদেশের জন্য। তাঁর বিশ্বাস, ৮ দলের ঐক্য এবং জনগণের অংশগ্রহণ এমন এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত গড়েছে, যা ভবিষ্যতে বহু দলীয় রাজনীতিতে সংহতি, সংগঠন, স্বচ্ছতা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করতে পারে।

তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছেন — “জনতার ভাষা শুনুন, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন, এবং তাদের ৫‑দফা দাবি গ্রহণ করে দেশের রাজনীতিকে নতুন গতি দিন।”

৮‑দলের ঐক্য ও জনগণের প্রত্যাশা — রাজনীতির নতুন অধ্যায়?

বর্তমানে আমাদের দেশে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা, দাবি, জনসমর্থন, এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা — সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, একটি নতুন রাজনীতির সূচনা হয়েছে। ৮‑দলের সংহতি, আন্দোলন, এবং জনব্যাগম্যের প্রতিফলন একদিকে যেমন নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে; তেমনি সমাজে সচেতনতা, দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের আশাও জাগিয়ে তুলেছে।

যদি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনগণের দাবি ও মনোভাবকে গুরুত্ব দিয়ে, স্বচ্ছ, ইচ্ছাকৃত, এবং ন্যায্যভাবে কাজ করে — তাহলে এটি নতুন একটি রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু করতে পারে।

চরমোনাই পীরের কথায়, এই আন্দোলন কেবল সংগঠনের নয় — “জাতির প্রত্যাশা, জনতার স্বপ্ন, এবং আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি।”

আসুন, দেখি — এই প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়ন হয়।

MAH – 14168 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button