রাজনীতি

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, মরদেহের পাশে গুলির খোসা মিলেছে

Advertisement

সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহির নিহত হন। ঘটনাস্থলে মরদেহের পাশে গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহিরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ সড়কের ওপর পড়ে ছিল এবং পাশেই গুলির খোসা পাওয়া গেছে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছে।

ঘটনার বিস্তারিত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি নেতা জহিরকে দুর্বৃত্তরা সড়কের ওপর কুপিয়ে ফেলে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরপরই পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। মরদেহ উদ্ধার করে ফোরেনসিক পরীক্ষা এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। জহিরকে হত্যা করা হয়েছে। কে বা কারা এবং কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিষয়টি তদন্তাধীন।”

নিহত নেতার পরিচয় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

নিহত আবুল কালাম জহির চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রে জানা যায়, জহির এক সময় মাদক ব্যবসা এবং মাটির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন এবং স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন শুরু করেন।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, রাজনৈতিক আধিপত্য ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। স্থানীয়রা বলছেন, জহির ও কিছু প্রতিপক্ষের মধ্যে পূর্ব থেকেই তর্ক-বিবাদ চলছিল।

ঘটনাস্থল ও প্রাথমিক তদন্ত

পুলিশ জানায়, পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মোস্তফার দোকান এলাকায় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে জহিরকে কুপিয়ে ফেলে চলে যায়। ঘটনাস্থলে মরদেহের পাশে গুলির খোসা পাওয়া যায়, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিচ্ছি এবং তদন্তের সঙ্গে সহযোগিতা করছি।”

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

স্থানীয়রা এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক সহিংসতার অংশ হিসেবে দেখছেন। এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছেন। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতারা এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে নেতাদের উপর হামলা নতুন নয়। তবে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সমাজে ভয় ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতার প্রয়োজনীয়তা আরও বৃদ্ধি করে।

আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা

চলতি ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের সনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা অপরিহার্য। এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত তদন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি সমাজে নিরাপত্তার বার্তা পৌঁছে দেয়।

লক্ষ্মীপুরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নতুন নয়। অতীতে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক নেতাদের উপর হামলা, ধাক্কাধাক্কি এবং হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। জহিরের হত্যাকাণ্ড স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, সম্পদ নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার মিশ্রণে এমন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহিরকে কুপিয়ে হত্যা এবং মরদেহের পাশে গুলির খোসা পাওয়া এই ঘটনায় এলাকার মানুষ, রাজনৈতিক নেতারা এবং প্রশাসন 모두 উদ্বিগ্ন। প্রাথমিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত সনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক ও সামাজিক দ্বন্দ্বের তীব্রতা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য।

এম আর এম – ২২৫২,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button