
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আসন বণ্টন ও মনোনয়ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সব প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়, তাই দল এবং দেশের স্বার্থে মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আসন বণ্টন নিয়ে দলের প্রস্তুতি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বিএনপি নির্বাচনী আসন বণ্টন ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে তফসিল প্রকাশ করবে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
তারেক রহমান এই প্রক্রিয়াকে তৎপর এবং সুষ্ঠু রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সকলকে নয়। যারা দলের নির্দেশনা মেনে চলে, তারা দলের বিজয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।”
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জন্য নির্দেশনা
তারেক রহমান জানিয়েছেন, ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিটি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও সবাইকে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে ছিলেন, তাদেরকেও আসন দেওয়া হয়েছে।
তিনি নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন, মনোনয়ন বঞ্চিতরা দল ও দেশের স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে। তার বক্তব্য, “দল বড়, দেশের স্বার্থ দলের চেয়ে বড়। মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করুন এবং তাদের বিজয়ী করতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হোন।”
ভার্চুয়াল বৈঠক ও প্রস্তুতি
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে দলের শীর্ষ নেতারা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ধারাবাহিক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরের ১১৪টি আসনের ৩৫০-এর বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই দফায় অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটি মনোনয়নবঞ্চিতদের সতর্ক করে দিয়েছে এবং তাদের মূল্যায়ন নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে একাধিক প্রার্থীকে একসঙ্গে সবুজ সংকেত দেওয়া হবে না। তারেক রহমান এই প্রক্রিয়াকে অভিভাবকসুলভ দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচালনা করেছেন।
দলের অভিজ্ঞতা ও সতর্কবার্তা
তারেক রহমান উল্লেখ করেছেন, ২০১৮ সালের পর থেকে বিএনপি নির্বাচনের বাইরে। এর মধ্যে বহু নির্বাচনে প্রহসনের অভিজ্ঞতা আছে। তাই এইবার মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়া আগেভাগেই শুরু করা হয়েছে, যাতে দলের সমর্থকরা প্রস্তুত থাকে এবং ভোটের মাঠে সংঘর্ষ বা বিশৃঙ্খলা না হয়।
তিনি বলেন, “যথাসময়ে নির্বাচন হবে কিনা, জনগণ মনে সংশয় পোষণ করতে পারে। এটা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। তাই সব রাজনৈতিক দলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।”
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
তফসিল ঘোষণার আগেই মনোনয়ন বিষয়ে সতর্কতা দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে মনোনয়ন বঞ্চিতরা কোথায় তাদের প্রচেষ্টা ঘুরাবে, তা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
তারেক রহমানের বার্তা অনুযায়ী, দলীয় ঐক্য বজায় রাখা এবং মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা দেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আসন বণ্টনের রাজনৈতিক গুরুত্ব
বিএনপির আসন বণ্টন ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শীর্ষ নেতা-কর্মীরা নিশ্চিত করতে চাইছেন যে, দলীয় ঐক্য বজায় থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র দলের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মনোনয়ন বিতর্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচনের আগে প্রস্তুতি গ্রহণ বিএনপির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলবে।
তারেক রহমানের বার্তা স্পষ্ট: দল ও দেশের স্বার্থে মনোনীত প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। আসন বণ্টন ও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সতর্কতা গ্রহণ দলের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি শক্তিশালী করার একটি পদক্ষেপ।
এম আর এম – ২০৫৩,Signalbd.com



