রাজনীতি

আমরা শুনতে পাচ্ছি বিএনপি-জামায়াত বোঝাপড়া হচ্ছে: নাসীরুদ্দীন

Advertisement

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে একটি ধরনের বোঝাপড়া বা সমঝোতার খবর শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি নোট অব ডিসেন্টের অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে, আর নির্বাচনের আগে জামায়াত গণভোটের দাবিতে পরিবর্তন আনতে পারে। এটি একটি অভ্যন্তরীণ সমঝোতার ইঙ্গিত হতে পারে।

শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে বিএমএ ভবনে আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে তরুণ আলেমদের ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে নাসীরুদ্দীন এ তথ্য জানান।

বিএনপির আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ও গণভোট

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি অভিযোগ করছে যে, গণভোট আয়োজন করতে অনেক টাকা প্রয়োজন। তবে গত ৫ আগস্টের পরে বিএনপির একটি আসনের প্রার্থী যে চাঁদা সংগ্রহ করেছেন, সেই অর্থ দিয়েই গণভোট আয়োজন করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, অতীতে বিএনপি মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়েছে। সেই সুবিধা নিয়ে সংবিধান কাটাছেঁড়া করেছে। তাই দেশের উচ্চকক্ষ প্রয়োজন। নাসীরুদ্দীন মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া জরুরি। তবে তিনি বলেন, নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই সম্পন্ন হবে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আহ্বান

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি তিনি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারেন, তাহলে নিজেকে জনগণের সরকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। তিনি জনগণ ও সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে এটি কার্যকর করার জন্য শহীদ মিনারে গিয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, এখন বড় দুটি দলের মধ্যে জুলাই সনদ ভোটের জন্য দর-কষাকষির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এনসিপি এই দর-কষাকষিতে জড়িত নয় এবং সনদকে ভোটের বিনিময় হিসেবে ব্যবহার করা হলে তা বাস্তবায়িত হবে না।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সমঝোতার গুরুত্ব

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের পর থেকে বিএনপি ও জামায়াত পাল্টাপাল্টি অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে দলগুলোর নেতারা একে অপরকে সমালোচনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ সমঝোতার খবর শোনা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইঙ্গিত বহন করছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বড় দুটি দলের সমঝোতা হলে দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়বে। এর ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জনগণের আস্থা বজায় রাখতে সুবিধা হতে পারে।

নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন

নাসীরুদ্দীন মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি বলেন, নির্বাচন কেবল অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হওয়া উচিত, অন্য কোনো ক্ষমতাশালী সরকারের তত্ত্বাবধানে নয়।

এনসিপি নেতা বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য সরকার ও জনগণকে একসাথে কাজ করতে হবে। এতে ভোটে বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।

বিএনপি-জামায়াত সমঝোতা: সম্ভাব্য প্রভাব

যদি এই বোঝাপড়া বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট থেকে সরে আসবে এবং জামায়াত নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে পরিবর্তন আনতে পারে। এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক দিক হতে পারে, তবে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কোনও তিক্ত প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার মানসিকতা উন্নয়নে সহায়ক হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সম্ভাব্য বোঝাপড়ার খবর শোনার কথা জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব প্রয়োজন, এবং নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হওয়া উচিত। রাজনৈতিক সমঝোতা দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বোঝাপড়া যদি কার্যকর হয়, তাহলে নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক উত্তেজনা কমে যেতে পারে এবং ভোটের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য হবে।

এম আর এম – ২০৩৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button