বিশ্ব

কুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদে স্থান পেলো বাংলাদেশি শিল্পীর ক্যালিগ্রাফি

Advertisement

কুয়েতের জাতীয় গ্র্যান্ড মসজিদে প্রথমবারের মতো স্থান পেলো বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি। কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন দুইটি উচ্চমানের ক্যালিগ্রাফি আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

ক্যালিগ্রাফি হস্তান্তরের অনুষ্ঠান

সোমবার রাজধানী কুয়েত সিটিতে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত সৈয়দ তারেক হোসেন কুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদের প্রধান বদর মাজুন আল ঢাফিরির হাতে দুইটি ক্যালিগ্রাফি হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর এবং দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, এই দুটি ক্যালিগ্রাফি মসজিদের আর্ট গ্যালারিতে স্থাপন করা হবে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শিত হয়। এর আগে কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ নানা দেশের ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শিত হলেও বাংলাদেশের কোনো ক্যালিগ্রাফি ছিল না।

বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনের গুরুত্ব

বাংলাদেশি শিল্পীর ক্যালিগ্রাফি কেবল শিল্পকর্ম হিসেবে নয়, বরং দেশের সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক ক্ষমতার প্রতিফলন। দূতাবাসের এই উদ্যোগের মাধ্যমে কুয়েতে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া এটি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।

ক্যালিগ্রাফির শিল্পী ও শৈলী

এই ক্যালিগ্রাফি তৈরি করেছেন বাংলাদেশের তরুণ একজন শিল্পী, যিনি ইসলামি শিল্পকলা ও আধুনিক ডিজাইনের সমন্বয়ে কাজ করেন। ক্যালিগ্রাফির প্রতিটি রেখা এবং অক্ষর মুসলিম চিত্রশিল্পের ঐতিহ্যকে বহন করে। শিল্পী বলেন, “আমার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের সৃজনশীলতা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা এবং দর্শকের মনে স্থান করে নেওয়া।”

কুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদের মতো বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শিত হওয়া তরুণ শিল্পীর জন্য গর্বের বিষয়। এটি বাংলাদেশের শিল্পী এবং সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

গ্র্যান্ড মসজিদে বিভিন্ন দেশের ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ, যা ইসলামী শিক্ষালয় এবং শিল্পকলার ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ, আগে কখনো এই মঞ্চে উপস্থিত হয়নি। এই শূন্যতা পূরণের জন্য দূতাবাস দুটি উচ্চমানের শিল্পকর্ম সংগ্রহ করে প্রদর্শনের উদ্যোগ নেয়।

বাংলাদেশি ক্যালিগ্রাফি মসজিদে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে দেশের শিল্পকলা ও সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে উপস্থিত হবে। এটি দেশের শিল্পীদের কাজের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও বৃদ্ধি করবে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশি ক্যালিগ্রাফি গ্র্যান্ড মসজিদের প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়ার খবর প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আনন্দ এবং গর্বের জন্ম দিয়েছে। এছাড়া দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কুয়েতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং এটি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও শক্তিশালী করবে বলে উল্লেখ করেছেন।

বিশেষজ্ঞ মন্তব্য

সংস্কৃতি ও শিল্পকলা বিশ্লেষকরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের শিল্পকর্মের স্থান পাওয়া নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা সরবরাহ করবে। তারা বলছেন, “এই ধরনের উদ্যোগ দেশের শিল্পকলার আন্তর্জাতিক মান বৃদ্ধি করবে এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বৈশ্বিকভাবে পরিচিতি দেবে।”

কুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদে বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি স্থান পাওয়া কেবল শিল্পী বা দূতাবাসের অর্জন নয়, এটি দেশের সাংস্কৃতিক সম্পদকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও তরুণ শিল্পীদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথ সুগম করবে।

এম আর এম – ১৫৭৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button