
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলটি কোনো দরকষাকষি বা সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে যেতে চায় না। হিংসা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দিয়ে সাধারণ জনগণের ভালোবাসা ও মতামতকে কেন্দ্র করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে চায় বিএনপি।
সোমবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় অর্ধশত মানুষ বিএনপিতে যোগ দেন, যা দলের বহুত্ববাদী ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরে।
বিএনপির লক্ষ্য ও নীতিমালা
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চললেও বিএনপি রংধনুর সাত রঙের মতো সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, দলের লক্ষ্য শুধুই ক্ষমতা নয়, বরং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে দেশের স্বার্থে একটি স্থিতিশীল এবং ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংসের শিকার হয়েছে। সেই ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সবার মতামতকে গ্রহণ করে দেশ পরিচালনার ইচ্ছা বিএনপির।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও দেশব্যাপী চ্যালেঞ্জ
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, কিছু কুচক্রী মহল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট জাতীয় ঐক্যকে ভাঙতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, এই ভাঙনের বিরুদ্ধে দল সতর্কভাবে অবস্থান নিয়েছে এবং দেশকে আবার ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে সততা ও নৈতিকতার অভাব দেশের যুবসমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক সততা অপরিহার্য।
সম্প্রদায়িক একতা ও সামাজিক দায়িত্ব
মির্জা ফখরুল হাইলাইট করেন যে, দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের যোগদান দলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, বিএনপি দেশকে শুধু রাজনৈতিক দিক থেকে নয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকেও সমৃদ্ধ করতে চায়।
তিনি সকলকে আহ্বান জানান, পার্থক্যকে বাদ দিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি বিএনপির বহুত্ববাদী রাজনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে তুলে ধরেন।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক লক্ষ্য
মির্জা ফখরুল আরও জানান, দলের লক্ষ্য হলো দেশের যুবসমাজকে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সঠিক নীতি প্রয়োগ করা। বিএনপি হিংসা ও প্রতিহিংসার রাজনীতিকে বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায়।
তিনি বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ ও লুটপাটের রাজনীতির সাথে জড়িতদের দেশ ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নেই। সঠিক রাজনীতি জনগণের আস্থা এবং সমর্থন অর্জন করে।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং বিএনপির উদ্দেশ্যকে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে। দলটি জনগণের অংশগ্রহণ ও একতা নিশ্চিত করতে চায়, ক্ষমতার লালসা নয়। সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও কুচক্রী মহলের চক্রান্তকে প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কাজ করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য।
এম আর এম – ১৮৬৭,Signalbd.com