রাজনীতি

আমরা কোনো বিভাজনে বিশ্বাসী নই: মির্জা ফখরুল

Advertisement

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা কোনো বিভাজনের রাজনীতি বিশ্বাসী নয়। সব ধর্ম, সম্প্রদায় এবং পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির মূল দর্শন। সোমবার রাজধানীর চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫০ জন নাগরিক বিএনপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।

যোগদানের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতা সোমনাথ দে, কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল ও সমেন সাহা নেতৃত্ব দেন। তারা ফুল দিয়ে মির্জা ফখরুলকে অভিনন্দন জানান এবং দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। বিএনপি মহাসচিব যোগ করেন, “আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে রেইনবো স্টেট সংক্রান্ত নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সব ধর্ম, মত এবং পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।”

বিভাজনের বিরোধিতা ও ঐক্যের রাজনীতি

মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশে বিভিন্ন সময়ে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে, ভুল বোঝাবুঝি প্রচারিত হয়েছে। রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। তবে আমরা চাই প্রতিশোধ নয়, ঐক্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হোক।” তিনি আরও বলেন, “জাতিগত অবস্থান, ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে দেশে বিভাজন তৈরি হয়েছে। তবে বিএনপি সেই বিভাজনের রাজনীতি বিশ্বাস করে না।”

মহাসচিবের মতে, সকল ধর্মের মানুষকে সঙ্গী করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়াই দলের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ এবং ২৪-এর নতুন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা সবাইকে একত্রিত করতে চাই। সকল সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সমর্থন

মির্জা ফখরুল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বিএনপি সবসময় আছে এবং থাকবে। তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”

বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী, সংখ্যালঘুদের প্রতি দলের এই মনোভাব শুধু রাজনীতিক উদ্দেশ্য নয়, এটি দলের দর্শন ও নৈতিক দায়িত্বের অংশ। এই প্রসঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দলের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমর্থন প্রদর্শন করেছেন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যের বিকল্প নেই। আমাদের দৃষ্টি প্রতিশোধ নয়, বরং দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়া। পিআর, প্রচারণা বা অন্য রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আমরা আগ্রহী নই। আমাদের লক্ষ্য সবাইকে একত্রিত করে একটি সুদৃঢ়, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া।”

তিনি আরও মন্তব্য করেন, “বাইরের কিছু দেশ ও মিডিয়া এখনও মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে আমরা আমাদের মূল আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে সরে আসব না।”

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির এই বক্তব্য সমন্বিত জাতীয় ঐক্য এবং সকল সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করার দিকে ইঙ্গিত করছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়ে দলের কার্যক্রম সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্থিতিশীলতা ও সামাজিক সংহতি বজায় রাখতে বিএনপির এমন মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাজনৈতিক বিভাজন হ্রাস এবং সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে।

ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি

মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা। দেশকে ভেদাভেদ ও বিভাজন থেকে মুক্ত করতে এবং সকল সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে বিএনপি সচেষ্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক সহমর্মিতা এবং সংলাপের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

বিএনপির এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আরও উদার এবং অসাম্প্রদায়িক করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটি একটি নতুন দিক নির্দেশক হিসাবে কাজ করবে।

এম আর এম – ১৮৬১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button