বাংলাদেশ

থানায় জিডি করতে গিয়ে সিগারেট দাবি, এএসআই মাহফুজের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়ে ঘুষ হিসেবে তিন প্যাকেট সিগারেট দিতে হয়েছে—এমন অভিযোগ করেছেন এক যুবক। ভুক্তভোগী দাবি করেন, জিডির পরিবর্তে তাঁকে ১২ শ টাকা মূল্যের বেনসন সিগারেট কিনে দিতে বাধ্য করা হয়।

ঘটনার বিস্তারিত

ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার সন্ধ্যায়। সিরাজদিখানের বাসিন্দা সালমান কবীর নামের ওই যুবক তাঁর হারানো পাসপোর্টের জিডি করতে থানায় যান। সেখানে দায়িত্বে থাকা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহফুজুর রহমান প্রথমে জিডি না নিতে চাইলে অনুরোধ করেন সালমান। এরপর এএসআই মাহফুজ জানান:

“দোকানে গিয়ে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেট কিনে নিয়ে আসেন। আর না হলে তিন প্যাকেট বেনসনের দাম দিয়ে জিডি নিয়ে যান।”

পরিস্থিতির চাপে পড়ে সালমান থানার পাশে একটি দোকান থেকে ১২শ টাকায় তিন প্যাকেট সিগারেট কিনে দেন।

পুলিশের প্রতিক্রিয়া

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এএসআই মাহফুজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং প্রথমে কথা না বোঝার ভান করেন। পরে সাংবাদিকের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে থানায় গিয়ে দেখা করার অনুরোধ জানান।

সিরাজদিখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আ.ন.ম ইমরান খান বলেন,

“থানায় কোনো সরকারি কাজের জন্য টাকা লাগে না। আমি ছুটিতে আছি। যদি না থাকতাম, তাহলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতাম।”

জনমনে ক্ষোভ ও প্রশ্ন

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, “জনসেবা দেয়ার কথা যাঁদের, তারাই যদি সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন, তবে জনগণ যাবে কোথায়?”

জিডি করার নিয়ম ও বাস্তবতা

বাংলাদেশে পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারালে থানায় গিয়ে বিনামূল্যে সাধারণ ডায়েরি করার সুযোগ রয়েছে। আইন অনুযায়ী, জিডি করতে কোনো টাকা বা পণ্যের বিনিময় নেওয়া অবৈধ এবং তা দুর্নীতির আওতায় পড়ে

উচ্চপর্যায়ে তদন্ত ও শাস্তির দাবি

এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা মনে করেন, এই ধরনের আচরণ পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button