বাংলাদেশ

নিরাপত্তা শঙ্কায় এবার জমছে না সাহ্‌রি অনুষ্ঠান

কয়েক বছর ধরে রোজার সময় রাতে সাহ্‌রিকে কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে ওঠে রাজধানীর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এ ধরনের সাহ্‌রি অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। কিন্তু এবার রোজায় রাতের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। সাহ্‌রি অনুষ্ঠানে হাঁকডাক নেই, নেই রেস্তোরাঁয় জমজমাট ভিড়। ফলে রেস্তোরাঁর মালিকেরা হতাশ এবং লোকসানের শঙ্কায় আছেন।

নিরাপত্তার কারণে সাহ্‌রি খেতে বাইরে যাচ্ছেন না মানুষ

নিরাপত্তার কারণে আগ্রহীরা সাহ্‌রি খেতে বাইরে যাচ্ছেন না। পুরান ঢাকার বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফায়েদ করিম বলেন, “প্রতিবছর রমজানে প্রায় রাতে বন্ধুদের নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সাহ্‌রি করতে যেতাম। তবে এবার এখন পর্যন্ত একবার বের হয়েছি। নিরাপত্তার জন্য সবাই মিলে আবার বের হতে পারব কি না, জানি না।”

রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতার অভাব

ধানমন্ডি, পুরান ঢাকা, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় রেস্তোরাঁয় সাহ্‌রি অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং পাচ্ছে না। ক্রেতার অভাবে ওই এলাকার বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ রাতে বন্ধ থাকে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, “মানুষ এখন আতঙ্কে আছে। গতবারের ১০ শতাংশ ক্রেতাও মিলছে না।”

সরেজমিনে পরিস্থিতি

সরেজমিনে ধানমন্ডির রেস্তোরাঁগুলোতে দেখা যায়, ক্রেতাশূন্য। রাস্তায়ও নেই আগের মতো সাহ্‌রি করতে আসা মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের চলাচল কম।

ব্যবসায় মন্দা

ধানমন্ডির দ্য প্যাসিফিক লাউঞ্জের ম্যানেজার জাহিদুল করিম জানান, “গত বছর থেকে এ বছর ক্রেতা তুলনামূলক বেশ কম। অন্য রমজানে ধানমন্ডির বেশির ভাগ বুফে রেস্তোরাঁগুলো খোলা থাকলেও এ বছর এমন রেস্তোরাঁ বন্ধ আছে।”

অপরাধের বৃদ্ধি

বিগত মাসগুলোতে রাজধানীতে বেড়েছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ২২৭টি।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাতে আমরা টহল বাড়িয়েছি। নগরবাসী রাতে স্বস্তিতে চলাচল করতে পারেন।”

অনলাইন বিক্রির অবস্থা

অনেক রেস্তোরাঁ সরাসরি ক্রেতাদের জন্য খোলা না থাকলেও অনলাইনে খাবার বিক্রি করছে। তবে নিরাপত্তার কারণে কিছু এলাকায় গ্রাহকদের পিকআপ সেবা দিতে পারছে না।

নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে এবারের রমজানে সাহ্‌রি অনুষ্ঠানগুলোতে আগ্রহী মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। রেস্তোরাঁ মালিকেরা লোকসানের শঙ্কায় আছেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রমজানের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।Bookmark messageCopy message

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button