ঢাবির নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা: ৮ ঘণ্টা পর শাহবাগ থানা ছাড়ল ‘তৌহিদী জনতা’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে ‘তৌহিদী জনতা’ পরিচয়ে একদল লোক শাহবাগ থানায় অবস্থান করে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করে এবং পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে থানা এলাকা ছেড়ে যায়।
ঘটনার বিবরণ
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর জানান, গ্রেপ্তারকৃত মোস্তফা আসিফ অর্ণব (২৫) কে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করার কারণে গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অর্ণবকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে।
ওই শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে ঘটনার বিবরণ দিয়ে লেখেন, “এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলেছে আমার ড্রেস ঠিক নাই, পর্দা করি নাই ইত্যাদি।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমরা একটি অভিযোগ পাই যে আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে আমাদের লাইব্রেরির সহকারী বুকবাইন্ডার অর্ণব হেনস্তা করেছে। পরে, কিছু ছাত্র তাকে আমার অফিসে নিয়ে আসে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে হেনস্তার কথা স্বীকার করে।”
থানায় অবস্থান
রাত দেড়টার দিকে অর্ণবকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জানতে থানায় ঢুকে পড়ে একদল লোক। তারা কর্তব্যরত কর্মকর্তার কক্ষের ভেতর থেকে ঘটনাটি লাইভ স্ট্রিম করে। এক বিক্ষোভকারী বলেন, “তারা তারাবির নামাজের পর গ্রেপ্তারের কথা জানতে পেরে মধ্যরাতে থানায় আসেন।”
অন্য একজন অভিযোগ করেন, পুলিশ জোর করে অর্ণবের বক্তব্য নিয়েছে। “তাকে মুক্তি দিতে হবে নইলে আমরা যাব না,” বলেন তিনি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সকালে থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা চলছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার এই ঘটনা সামাজিক ও আইনগত আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি নারী নিরাপত্তা এবং সামাজিক মূল্যবোধের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেছে।