বাংলাদেশ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি: জামায়াত আমির

Advertisement

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি এবং সবচেয়ে বড় জন-আকাঙ্ক্ষা।” তিনি বলেন, দুর্নীতি নামক মহামারি জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে আমাদের সম্ভাবনাকে গ্রাস করে নিচ্ছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস’ উপলক্ষে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। জামায়াত আমীর ‘জুলাই বিপ্লব’-এর চেতনায় একটি দুর্নীতিমুক্ত, নৈতিক ও স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবার প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

দুর্নীতির ভয়াবহতা ও জামায়াতের অবস্থান

ডা. শফিকুর রহমান তাঁর বিবৃতিতে দেশে দুর্নীতির ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং এর কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরেছেন।

দুর্নীতির প্রভাব: তিনি বলেন, “জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি নামের মহামারি আমাদের সম্ভাবনাকে গ্রাস করে নিচ্ছে।” তাঁর মতে, জনগণের অধিকার লঙ্ঘন, প্রশাসনের অকার্যকারিতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন এবং সামাজিক বৈষম্যের মূল শেকড় হলো এই দুর্নীতি।

জামায়াতের অঙ্গীকার: তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পরিচ্ছন্ন, নৈতিক এবং স্বচ্ছ রাজনীতির পক্ষের শক্তি। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সকল বৈষম্য, অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী সর্বদা সোচ্চার ছিল এবং থাকবে

আমিরে জামায়াতের মতে, দুর্নীতিই হলো দেশের প্রধান সমস্যা, যা জাতির সকল অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

জুলাই বিপ্লব ও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন

ডা. শফিকুর রহমান দেশের সাম্প্রতিক ‘জুলাই বিপ্লব’-কে কেন্দ্র করে একটি নতুন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের কথা বলেছেন।

নতুন যাত্রা: তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ শৃঙ্খলা, ন্যায়, সততা, দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়

যোগ্যতার মানদণ্ড: তিনি কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান, তার একটি স্পষ্ট রূপরেখা দেন: “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে ক্ষমতা নয়, যোগ্যতা কথা বলবে; স্বজনপ্রীতি নয়, সৎ মেধার প্রতিফলন ঘটবে এবং ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।”

এই বক্তব্যের মাধ্যমে জামায়াত আমীর যোগ্যতা, সততা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

প্রশাসনের প্রতি আহ্বান: ন্যায়নিষ্ঠ ও জনবান্ধব প্রশাসন

ডা. শফিকুর রহমান দেশের প্রশাসনের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, জনপ্রত্যাশার এই নতুন অধ্যায়ে প্রশাসনের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশাসনিক মানদণ্ড: তিনি বলেন, প্রশাসনকে হতে হবে ন্যায়নিষ্ঠ, স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল এবং জনবান্ধব

লক্ষ্য: দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততার স্বাক্ষর রেখে একটি আধুনিক, দায়িত্বশীল ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গঠন করতে হবে, যা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবে।

তিনি মনে করেন, প্রশাসনের দুর্নীতিমুক্ত হওয়া এবং জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক

জামায়াত আমীর দেশের সর্বস্তরের জনগণ, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সমাজ, তরুণ প্রজন্ম এবং প্রশাসনের সব পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দৃপ্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

“আসুন, জুলাই বিপ্লবের চেতনায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই এবং দুর্নীতিমুক্ত জনবান্ধব নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”

তিনি বিশ্বাস করেন, কেবল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই দুর্নীতিকে নির্মূল করা সম্ভব। দেশের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা ছাড়া দুর্নীতির মতো মহামারি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

জাতীয় জীবনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স প্রতিষ্ঠা

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স প্রতিষ্ঠার দাবিটি বর্তমান সময়ে দেশের সবচেয়ে বড় জন-আকাঙ্ক্ষা। জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ক্ষমতা বা স্বজনপ্রীতির বদলে যোগ্যতা ও সততার ভিত্তিতে একটি আধুনিক, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। এই দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান এবং ঐক্যের আহ্বান দেশের রাজনীতিতে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এম আর এম – ২৫৪৭, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button