রাজধানী ঢাকায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে অনুভূত ভূমিকম্পের পর জেলা প্রশাসন হতাহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম এক বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা আর আহত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
আর্থিক সহায়তার প্রক্রিয়া
আহতদের জন্য এই সহায়তা চিকিৎসকের সুপারিশ অনুযায়ী প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যেকোনো ব্যক্তি নিজে অথবা তার পরিচর্যাকারী, নিকটাত্মীয় বা অ্যাটেনডেন্ট কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের মাধ্যমে এই সহায়তা পেতে পারবেন।
সহায়তা সংক্রান্ত যোগাযোগের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। ফোন নম্বর: +৮৮০১৭০০৭১৬৬৭৮।
ভূমিকম্পের বিস্তৃত তথ্য
ভূমিকম্পটি শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার কিছু আগে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদী। ভূমিকম্পটির গভীরতা ১০ কিলোমিটার ছিল।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ৫.৫ হিসেবে জানিয়েছে।
হতাহতের পরিস্থিতি
এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঢাকা জেলা প্রশাসন দ্রুত প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আহত ও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি, জেলা প্রশাসন সারাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যেন প্রতিটি হতাহত পরিবারকে দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়। জনগণ আতঙ্কিত না হয়ে প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলুক।”
সেফটি নির্দেশনা ও জরুরি পদক্ষেপ
ঢাকা জেলা প্রশাসন জরুরি অবস্থার জন্য বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। ভূমিকম্পের পর আরও সৃষ্টিপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে এবং দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দিতে এ কন্ট্রোল রুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসন সাধারণ মানুষকে ঘরবাড়ি নিরাপদে রাখার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে।
জনসাধারণের সহায়তার জন্য কন্ট্রোল রুম
ঢাকা জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। যারা সাহায্য প্রয়োজন, তারা ফোনের মাধ্যমে সহায়তা চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন আহত বা নিহতদের পরিবারকে সরাসরি খুঁজে বের করে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ভূতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন, ঢাকাসহ দেশের কিছু অংশ ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে পড়ে। নরসিংদী অঞ্চলে উৎপত্তি হওয়া এই ভূমিকম্পটি ৫.৭ মাত্রার হওয়ায় রাজধানীতে সরাসরি ধ্বংসাত্মক প্রভাব না ফেললেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তাদের মতে, ভবিষ্যতে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য স্থানীয় প্রশাসন, সরকার এবং জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে।
সরকারের পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকার ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও জরুরি সাপোর্ট টিমগুলো তৈরি হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা এবং ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি
ভূমিকম্পের পর বিশেষজ্ঞরা সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভূত হলে শান্তভাবে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, জরুরি ফোন নম্বরগুলো সবসময় সঙ্গে রাখার আহ্বান করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে নিহত ও আহতদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, সকল কার্যক্রম স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত প্রস্তুতি চলছে।
এই উদ্যোগ প্রমাণ করছে যে, সরকার ও জেলা প্রশাসন প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
MAH – 13918 I Signalbd.com



