বাংলাদেশ

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ জন

Advertisement

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৮৮ জন। একই সময়ে ১১৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন বিভাগে রোগী ভর্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

হাসপাতাল ও চিকিৎসা পরিস্থিতি

সাম্প্রতিক ভর্তির তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে ১৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ২৬৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৮৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪৫ জন, খুলনা বিভাগে ৫৯ জন, ময়মনসিংহে ৬৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭০ জন, রংপুরে ১৯ জন এবং সিলেটে ৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থা দেখা দিলে শিগগির হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে অনেকেই হেমোরােজিক ডেঙ্গু বা ডেঙ্গু ফিভারের জটিলতায় ভুগছেন।

রোগের পটভূমি

ডেঙ্গু বাংলাদেশে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সমস্যা হয়ে থাকে। এডিস মশা প্রধান বাহক হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে বৃষ্টিপাতের পর এবং পানি জমে থাকা স্থানে মশা দ্রুত প্রজনন করে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৭২,৮২২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ শহুরে এলাকাগুলি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

আক্রান্ত অঞ্চলের বিশ্লেষণ

ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকার আশেপাশের এলাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের আবাসিক এলাকা এবং ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।

মহানগরীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। পুরনো ও জলজমা হওয়া স্থানগুলোতে মশা নিধনের জন্য স্প্রে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

সরকারের পদক্ষেপ

স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং স্থানীয় প্রশাসন মিলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং অব্যবহৃত পানি জমে না রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ মেডিকেল কেয়ার ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, ডেঙ্গু নিরীক্ষণের জন্য হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার নিয়মিতভাবে তথ্য সংগ্রহ করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

জরুরি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে সময়মতো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আরও বলেছেন, ব্যক্তি পর্যায়ে ফুসফুস এবং অন্যান্য জটিলতা এড়াতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও জল পান নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্যবিভাগের সাথে সমন্বয় অত্যাবশ্যক।

ভবিষ্যৎ ঝুঁকি এবং সতর্কতা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের শুরুতে ডেঙ্গু সংক্রমণ কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি ও জলজমার কারণে ঝুঁকি এখনো আছে। জনসাধারণকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যা ও মৃতের পরিসংখ্যান মনিটরিং করা হবে। স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি আছে যে, কোনো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভ্রমণ করলে পর্যাপ্ত সতর্কতা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

এম আর এম – ২০৬৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button