বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনে প্রকাশ্যে গুলি চালানো সাবেক আ. লীগ নেতা অস্ত্রসহ আটক

Advertisement

চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে গুলি চালানোর অভিযোগে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর কমার্স কলেজের পাশে একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত ব্যক্তির নাম মোস্তফা কামাল টিপু। তিনি নগরীর ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশের অভিযান থেকে তার কাছ থেকে একটি বন্দুক, ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের গুলি, অস্ত্র পরিষ্কারের সরঞ্জাম এবং বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের কাছে উদ্ধার হওয়া গুলির মধ্যে এমনও রয়েছে যা পুলিশের ব্যবহৃত।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) জানিয়েছে, টিপুর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে গুলি চালানো, ছাত্র হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত বছরের ৪ আগস্ট জুলাই আন্দোলনকালে নগরীর সিআরবি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন দুই আন্দোলনকারী—সাইফুল ইসলাম ও মো. হাসান।

ঘটনাস্থল ও অভিযানের বিস্তারিত

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমার্স কলেজ সংলগ্ন ভবনে পরিচালিত হয়। স্থানীয়রা জানান, অভিযানটি ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। মোস্তফা কামাল টিপুর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ থাকায় পুলিশ বিশেষ নজর রাখছিল।

অভিযানকারীরা তার বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে বন্দুক, গুলি এবং অস্ত্র সম্পর্কিত অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বইও পাওয়া গেছে, যা আর্থিক অপরাধের সম্ভাব্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জুলাই আন্দোলন ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে শুরু হয়েছিল। আন্দোলনের সময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণ ঘটেছিল। এই সময় টিপুর নেতৃত্বে একটি অংশকর্মী গ্রুপে প্রকাশ্যে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ আছে।

চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক প্রভাবিত সহিংসতা হিসেবে দেখা যায়। বিশেষ করে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে সরকারি ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক জটিলতার কারণ হয়ে থাকে।

প্রতিক্রিয়া

সিএমপি কর্মকর্তারা বলেছেন, “নগরীতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে এ ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে।”

স্থানীয়রা এবং ছাত্র সংগঠনগুলো এই গ্রেফতারের প্রশংসা করছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নজরদারি প্রয়োজন।

বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত সাবেক ছাত্রনেতাদের হামলাকারী ও সহিংস কর্মকাণ্ড নগরীর শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তারা বলছেন, এই ধরনের গ্রেফতার একটি সংকেত যে নিরাপত্তা বাহিনী সক্রিয়ভাবে অপরাধ দমন করছে

চট্টগ্রামের নাগরিকরা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন যে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সহিংসতা কমে আসবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রাজনৈতিক সহিংসতা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পরিণত হতে পারে।

চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে গুলি চালানোর অভিযোগে মোস্তফা কামাল টিপুর গ্রেফতারি নগরীতে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অস্ত্র, গুলি এবং চেকবই উদ্ধার এই ঘটনার গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে।

তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

এম আর এম – ১৯৯১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button