ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় অবিলম্বে “শক্তিশালী” সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন যে, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে। তাঁর মতে, হামাস তাদের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি বা মৃতদেহ হস্তান্তরের শর্ত পূরণ করছে না, যা ইসরাইলের জন্য unacceptable।
হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ফরেনসিক পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছে যে, হামাস কর্তৃক হস্তান্তর করা কফিনের মৃতদেহ দুই বছর আগে গাজা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং এটি এখনও গাজায় থাকা জিম্মিদের অন্তর্ভুক্ত নয়। এই পরিস্থিতি ইসরাইলের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া তথ্য ও অজুহাত ব্যবহার করে ইসরাইলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় শক্তিশালী হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
হামাস এক বিবৃতিতে ইসরাইলের অভিযোগকে “অতিরঞ্জিত ও মিথ্যাভিত্তিক” হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েল নতুন আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে চাইছে এবং গাজায় জিম্মিদের মৃতদেহ হস্তান্তরের পরিকল্পনাও ব্যাহত করছে। হামাসের বক্তব্যে বলা হয়েছে, ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে চালানো পদক্ষেপকে বৈধ দেখানোর জন্য মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করছে।
সামরিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত ১০ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা চালাতে শুরু করে। এই ঘটনায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ৯৩ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে নির্ধারিত এলাকায় থাকা ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর গুলি চালাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
মানবিক প্রভাব
গাজার সাধারণ মানুষ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। সামরিক হামলার ফলে বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ও চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করতে হচ্ছে। শিশু ও অসহায় মানুষের ওপর প্রভাব মারাত্মক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি বারবার হামলার কারণে শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের ওপর প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দ্রুত এবং নিরপেক্ষ সমাধান আশা করছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিবিসি, রয়টার্স ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা নেতানিয়াহুর নির্দেশ এবং হামাসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সামরিক পদক্ষেপের জন্য রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইসরায়েলি-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষের নতুন দফা আন্তর্জাতিকভাবে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজায় শক্তিশালী হামলা চালানোর ঘটনায় ইসরায়েলি-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষ আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক সমাধান খুঁজে বের করার চ্যালেঞ্জ এখনও মাউলিক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব কিভাবে গাজার জনগণের ওপর পড়বে এবং ভবিষ্যতে শান্তি প্রক্রিয়াকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।
এম আর এম – ১৯৮৯,Signalbd.com



