মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সেনা সদরে অনুষ্ঠিত একটি সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এই সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা।
সাক্ষাতের বিস্তারিত
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের সেনা প্রধান পারস্পরিক কুশল বিনিময় করেন এবং সামরিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার, পরিদর্শন ও অন্যান্য যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে সম্পর্ক সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। এই আলোচনা উভয় পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করতে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, সাক্ষাৎটি সম্পূর্ণ সৌজন্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এবং উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব ও সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, গত ২৫ অক্টোবর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেই সময়ও তারা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যৌথ প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও সামরিক পরিদর্শনের মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক কৌশল ও সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটেছে।此次 সাক্ষাতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।
সাক্ষাতের প্রভাব ও গুরুত্ব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সামরিক পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি কেবল সামরিক খাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া, দুটি দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে উভয় পক্ষই বিভিন্ন খাতে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি সুস্থ ও স্থিতিশীল অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে নিয়মিত সামরিক আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের সেনাবাহিনী আরও শক্তিশালী ও সমন্বিতভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে। এর ফলে ভবিষ্যতে অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।
এক বিশ্লেষক বলেন, “এ ধরনের সৌজন্য সাক্ষাৎ কেবল সামরিক সম্পর্কেই নয়, দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার সূচনা।”
ভবিষ্যৎ সহযোগিতার সম্ভাবনা
সাক্ষাৎ শেষে উভয় পক্ষ যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও পরিদর্শনের মাধ্যমে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন। এই উদ্যোগের ফলে ভবিষ্যতে আরও সুনিয়ন্ত্রিত, দক্ষ ও সমন্বিত সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনা আরও গভীরভাবে প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে নতুন যৌথ উদ্যোগ ও প্রকল্পের পথ সুগম হবে। উভয় দেশের সামরিক নেতৃত্বই এতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এই সৌজন্য সাক্ষাৎ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দুই দেশের সেনা প্রধানদের মধ্যে পারস্পরিক কুশল বিনিময় এবং বিভিন্ন সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয় আলোচনা ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিশ্চিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের এই ধরনের উদ্যোগ অঞ্চলীয় স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এম আর এম – ১৯৮০,Signalbd.com



