শিক্ষা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত

Advertisement

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর এসেছে। সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, সকল প্রধান শিক্ষকের বিদ্যমান ১১তম ও ১২তম গ্রেডের বেতন কাঠামো উন্নীত করে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে সারাদেশে ৬৫ হাজারেরও বেশি প্রধান শিক্ষক উপকৃত হবেন।

ঘোষণার বিস্তারিত

সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য এই নতুন বেতন স্কেল কার্যকর করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষক, যারা পূর্বে ১১তম (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ও ১২তম (প্রশিক্ষণবিহীন) গ্রেডে বেতন পেতেন, তারা এখন থেকে ১০ম গ্রেড অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাবেন।
এ পদক্ষেপ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর কার্যকর করা হয়েছে।

কেন এই সিদ্ধান্ত

বিষয়টি শুরু হয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পর। আদালত ১২৪/২০২২ নম্বর সিভিল রিভিউ পিটিশনের রায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার যৌক্তিকভাবে দেশের সব প্রধান শিক্ষকের জন্য একই সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করে।

পরিবর্তনের আগে অবস্থা

দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বেতন কাঠামো উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীনরা ১২তম গ্রেডে বেতন পেতেন।
তবে এসব শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেড দাবি করে আসছিলেন, কারণ দায়িত্বের চাপ ও কাজের গুরুত্বের সঙ্গে পূর্বের গ্রেড মিলছিল না।

এই সিদ্ধান্তের প্রভাব

এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক সুরক্ষা আরও সুসংহত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেতন বৃদ্ধি শিক্ষকদের পেশাগত সম্মান ও মনোবলকে বাড়িয়ে তুলবে।
শিক্ষকরা এখন আরও উৎসাহ ও মনোযোগ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন। এর ফলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরাও উন্নত ও মানসম্পন্ন শিক্ষা পাবে।

শিক্ষক সমাজের প্রতিক্রিয়া

দেশব্যাপী শিক্ষক সমাজ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ তাদের ন্যায্য দাবির স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যতে শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। অনেক প্রধান শিক্ষক মনে করছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাঁদের পেশায় নতুন উদ্দীপনা যোগ করবে।

সরকারের প্রত্যাশা

সরকার আশা করছে, নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার পর প্রধান শিক্ষকরা অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষার মান উন্নয়নে আরও সক্রিয় হবেন। শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষার্থীদের সাফল্যের হার বৃদ্ধি পাবে।

পরিসংখ্যান

বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। তাদের সবার জন্য একইসঙ্গে এই নতুন বেতন কাঠামো প্রযোজ্য হবে।

সারসংক্ষেপ  

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১০ম গ্রেডের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এটি শুধুমাত্র তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করেনি, বরং শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এখন দেখার বিষয়, এই আর্থিক উন্নয়ন কীভাবে শিক্ষার মানোন্নয়নে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনে।

এম আর এম – ০৫৭০, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button