বাংলাদেশ

ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান খামেনির

Advertisement

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনার নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পের দাবি যে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়ে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করেছে, সেটিও উড়িয়ে দিয়েছেন।

খামেনি বলেছেন, জোরপূর্বক চুক্তি চুক্তি নয়; বরং এটি নিপীড়ন এবং চাপ। তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা অযৌক্তিক এবং হস্তক্ষেপ অনুচিত।

পারমাণবিক ইস্যুতে পূর্ববর্তী উত্তেজনা

গত জুন মাসের ১২ তারিখে তেহরান ও ওয়াশিংটন পারমাণবিক ইস্যুতে পরোক্ষ আলোচনা করেছিল। কিন্তু সেই সময় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এই হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।

ট্রাম্প এই হামলার প্রসঙ্গে গর্ব প্রকাশ করেছেন এবং ইরানের পারমাণবিক শিল্প ধ্বংসের দাবি জানিয়েছেন। তবে খামেনি এই দাবিকে ‘স্বপ্ন দেখা’ হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন।

খামেনির প্রতিক্রিয়া ও বক্তব্য

খামেনি বলেন, “ট্রাম্প বলেন, তিনি একজন চুক্তিকারী। কিন্তু যদি কোনও চুক্তিতে জোরজবরদস্তি করা হয় এবং তার ফল আগেই নির্ধারিত থাকে, তাহলে সেটি চুক্তি নয়, বরং চাপিয়ে দেওয়া এবং নিপীড়ন।”

তিনি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা আছে কি নেই, সেটা নিয়ে আমেরিকার মাথাব্যথা অযৌক্তিক। পশ্চিমা শক্তিগুলো ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ তুলছে, যা তেহরান পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র বেসামরিক জ্বালানি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খামেনির এই প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শক্ত অবস্থান এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংকেত। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার সম্ভাবনা কমে গেছে।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইসরাইলের পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে ইরানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। তবে খামেনি এই প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেননি।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক প্রভাব

ইরানের এই কঠোর অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। পারমাণবিক ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলো ইরানকে চাপ দিচ্ছে, তবে তেহরান এ ধরনের চাপকে প্রত্যাখ্যান করছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক জটিল হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান যদি নিজের স্থাপনা সংরক্ষণে দৃঢ় থাকে, তাহলে নতুন কূটনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা কঠিন হবে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ

ইরানের পদক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া আগামী মাসগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। খামেনির বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তেহরান কোনভাবেই জোরপূর্বক চুক্তি গ্রহণ করবে না।

কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই অবস্থায় নতুন আলোচনার সম্ভাবনা সীমিত। তবে আন্তর্জাতিক চাপে ইরান যদি কোনোভাবে নরম হয়, তাহলে আংশিক সমঝোতার সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে।

খামেনির প্রত্যাখ্যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবের চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরা হচ্ছে। পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান কঠোর অবস্থানে থাকার কারণে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি কীভাবে বিকশিত হবে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

এম আর এম – ১৮৬৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button