
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছেন, ছোটখাটো ত্রুটি ছাড়া ভোট প্রক্রিয়া অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ছিল।
ভোটগ্রহণের সারসংক্ষেপ
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে পর্যবেক্ষক দল। দলের সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, ভোটের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও অবাধ ছিল। ভোট কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। ছোটখাটো ত্রুটি থাকলেও তা ভোটের ন্যায্যতা বা স্বচ্ছতায় কোনো প্রভাব ফেলেনি।
পর্যবেক্ষক দলের পর্যবেক্ষণ
পর্যবেক্ষক দলের নয় সদস্য সারাদিন ভোট কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করেছেন। সদস্যরা জানিয়েছেন, ব্যালট বাক্স স্বচ্ছ থাকায় কিছু ভোটারের ভোট দেখা গেছে। যদিও এটি কাম্য নয়, তবে এর ফলে ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতায় প্রভাব পড়েনি।
প্রফেসর রফিকুল ইসলাম বলেন, “ভোট কারচুপির কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নি। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন থাকলেও ভোটাধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগ করা হয়েছে।”
পর্যবেক্ষক দলের অন্যান্য সদস্য ছিলেন প্রফেসর ড. এম. নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. আবুল হাশেম, প্রফেসর ড. সৈয়দ জাবিদ হোসেন, প্রফেসর ড. মো. শফিকুল আলম, প্রফেসর ড. বেগম আসমা সিদ্দিকা, প্রফেসর ড. মাহমুদা খাতুন, অধ্যাপক শেহনাজ ইয়াসমিন।
ভোটের পূর্বপ্রস্তুতি ও আয়োজন
নির্বাচনের আগে শিক্ষার্থীদের টোকেন বিতরণ, ব্যালট স্বাক্ষর এবং প্রচারপত্র দেওয়ার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। ভোটারদের গড় আনা-যাওয়া সহজ করার জন্য বিভিন্ন হলের মধ্যে ভোট কেন্দ্র পরিচালিত হয়েছে।
কিছু কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা বেশি থাকায় ভোট দিতে সময় বেশি লেগেছে। তবে প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
ভোট প্রক্রিয়ার সুষ্ঠুতা নিশ্চিত হওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সংঘর্ষ বা অশান্তি ঘটেনি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ধরনের সুষ্ঠু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও সমন্বয় বাড়ায়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য ইতিবাচক বার্তা হিসেবে কাজ করবে।
বিশেষজ্ঞ মন্তব্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগায়। ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ভবিষ্যৎ নির্বাচনের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করে।
প্রফেসর রফিকুল ইসলাম বলেন, “ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের মতামত ও অধিকার প্রয়োগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ভোট শুদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ হওয়া আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
পর্যবেক্ষক দল আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতের নির্বাচনে এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য মানদণ্ড হিসেবে কাজ করবে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আরও দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ করবে।
এম আর এম – ১৮১৬,Signalbd.com