বাংলাদেশ

নির্বাচনে কোনো কর্মকর্তা দলীয় আচরণ করলেই কঠোর ব্যবস্থা: সিইসি

Advertisement

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো কর্মকর্তা যেন দলীয় আচরণ বা পক্ষপাতমূলক মনোভাব প্রদর্শন না করে, তা নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, “যদি কেউ দলীয় বা পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক অভিলাষ থাকলেও সেটার প্রভাব কাজের মধ্যে ফুটে উঠতে দেওয়া হবে না।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য

সিইসি নাসির উদ্দিন মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার সমাপনী বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আগে কর্মকর্তাদের ওপর চাপ থাকে, কোনো নির্দিষ্ট পক্ষে কাজ করতে হবে। এখন মেসেজ স্পষ্ট—যদি কেউ কোনো পক্ষের হয়ে কাজ করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এ কথা বারবার বলব।”

তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ওপর কোনো রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক প্রভাব কার্যকর হবে না। “আগে রাতে গিয়ে প্রভাবিত করা হতো বা ভয় দেখানো হতো। এখন সেই ভয় থাকবে না। আমরা সব প্রস্তুতি নেব যাতে কেউ দলীয় আচরণ করতে না পারে।”

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চারজন কমিশনার এবং ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ১০ জন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, যারা সকলেই সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা।

সিইসি বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে এই নির্বাচনকে আমি জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে দেখছি। আমাদের একটাই লক্ষ্য—একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া।”

নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ

নির্বাচন কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছে। এতে অংশ নিয়েছেন সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি।

নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা চাই এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হোক। দেশের মানুষ দেখুক, নির্বাচন সত্যিই স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। আয়নার মতো স্বচ্ছ একটি নির্বাচন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”

এছাড়াও নারী নেত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করতে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেছেন।

প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই নির্দেশনার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের আচরণে রাজনৈতিক প্রভাব কমানো হবে। এটি ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস ফিরে আনতে সহায়ক হবে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি চাপ কমানো হলে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হবে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলেন, “কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ থাকা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি। কমিশন যে কঠোর ব্যবস্থা নেবে তা ভবিষ্যতের নির্বাচনের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”

অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করেন, কমিশনের এই পদক্ষেপ দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ঘোষণার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, কোনো কর্মকর্তা যদি দলীয় আচরণ বা পক্ষপাতমূলক মনোভাব দেখায়, তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের মানুষ এবার একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।

এম আর এম – ১৬৬৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button