বাংলাদেশ

কাকরাইলে গণঅধিকার পরিষদ-জাতীয় পার্টি সংঘর্ষ: আইএসপিআরের বক্তব্য

Advertisement

রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত ও উভয়পক্ষের অভিযোগ

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন গণঅধিকার পরিষদ তাদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় থেকে নাইটেঙ্গেল মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি যখন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পৌঁছায়, তখন উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গণঅধিকার পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, তাদের মিছিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির নেতারা দাবি করেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা তাদের কার্যালয়ে হামলা করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ

সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রমনা থানার পরিদর্শক আতিকুল আলম খন্দকার জানান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা রয়েছেন এবং পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আহতদের অবস্থা ও চিকিৎসা

সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাত রয়েছে এবং নাকের হাড় ভেঙেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা গুরুতর, তবে শঙ্কামুক্ত।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ প্রভাব

এই সংঘর্ষের ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ উভয়ই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী দাবি করেছেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা তাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।

অপরদিকে, গণঅধিকার পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

এই সংঘর্ষের ঘটনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের সহিংস ঘটনা রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সরকারের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও স্বস্তি নিশ্চিত করতে যেকোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে। সরকারের এই অবস্থান রাজনৈতিক অঙ্গনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।

কাকরাইলে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।

MAH – 12552,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button