
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবেশী ভারতের জন্য বিশেষ উপহার হিসেবে এবার ৫০০ কেজি সুগন্ধি চিনিগুড়া চাল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চালগুলো ভারতের আগরতলায় প্রবেশ করে। পরে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সেগুলো বিতরণ করা হবে।
প্রতিবছরের মতো এবারও পূজা উপলক্ষে এ ধরনের উপহার বিনিময় দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপহারের বিস্তারিত
আধিকারিক সূত্রে জানা যায়, ‘চাষী’ ব্র্যান্ডের সুগন্ধি চিনিগুড়া চালভর্তি একটি পিকআপ ভ্যান সোমবার সকালে আখাউড়া স্থলবন্দরে আসে। এরপর কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চালগুলো ভারতে প্রবেশ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পাঠানো এই উপহার ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। মূলত ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের পণ্য উপহার হিসেবে পাঠানো হয়, আর এ বছর সেই তালিকায় যুক্ত হলো ৫০০ কেজি চিনিগুড়া চাল।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পণ্য উপহার বিনিময়ের রীতি রয়েছে। এর আগে বহুবার ইলিশ মাছ, মিষ্টি বা বিভিন্ন স্থানীয় পণ্য উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে।
চিনিগুড়া চাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সুগন্ধি চাল, যা সাধারণত উৎসব ও বিশেষ আয়োজনে ব্যবহৃত হয়। তাই পূজা উপলক্ষে এ চাল উপহার পাঠানোকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দুই দেশের সম্পর্কের প্রতিফলন
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধন গভীর। প্রতিবছর শারদীয় দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশ সরকার থেকে ভারতের জনগণ ও বিশিষ্টজনদের জন্য বিশেষ উপহার পাঠানো সেই সম্পর্কের প্রতীকী প্রকাশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তোলে।
প্রতিক্রিয়া ও গুরুত্ব
ভারতের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মহলে এ ধরনের উপহারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা হিসেবে দেখা হয়। পূজার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে এমন সৌজন্য পণ্য পাওয়া স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
অন্যদিকে বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি অংশ মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, কূটনৈতিক সম্পর্ককেও এগিয়ে নেয়।
উপহারের অর্থনৈতিক ও প্রতীকী দিক
৫০০ কেজি চালের অর্থনৈতিক মূল্য হয়তো খুব বড় নয়, তবে এর প্রতীকী মূল্য অনেক বেশি। এটি মূলত শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বার্তা বহন করে।
বাংলাদেশের কৃষিজ পণ্যের মধ্যে চিনিগুড়া চাল একটি বহুল পরিচিত ব্র্যান্ড। এই উপহার দুই দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবেও পৌঁছে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগকে ক্ষুদ্র মনে হলেও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের বার্তা ছড়িয়ে দেয় এই উপহার।”
অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল মনে করছে, এমন আয়োজন বাংলাদেশের কৃষি পণ্যের প্রচারেও ভূমিকা রাখে, কারণ এগুলো ভারতের অভিজাত মহলে পৌঁছায়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের জন্য ৫০০ কেজি চিনিগুড়া চাল উপহার পাঠানো শুধু একটি আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নয়, বরং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক। প্রতিবছর যে সৌহার্দ্য বিনিময় চলে আসছে, এ বছরও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। এখন দেখা যাক, ভবিষ্যতে এ ধরনের উপহার বিনিময় কীভাবে দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করে।
এম আর এম – ১৪৬৫,Signalbd.com