
সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণ ভাতা ৪২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপনে এই ভাতার হার কার্যকর হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী কর্মকর্তারা নতুন ভাতার সুবিধা পাবেন।
প্রশিক্ষণ ভাতার নতুন হার
প্রজ্ঞাপনের আওতায় ৯ গ্রেড বা তার উচ্চ গ্রেডের কর্মকর্তাদের কেন্দ্রে অবস্থানকালীন ভাতা নতুনভাবে নির্ধারিত হয়েছে ৮০০ টাকা; যা পূর্বে ৬০০ টাকা ছিল। একই গ্রেডের মাঠসংযুক্ত অবস্থার জন্য নতুন ভাতা হয়েছে ১,০০০ টাকা, যা আগে ৭০০ টাকা ছিল।
১০ম গ্রেড বা তার নিচের কর্মকর্তাদের জন্য যথাক্রমে কেন্দ্রে অবস্থানকালীন ভাতা ৬০০ টাকা এবং মাঠসংযুক্ত অবস্থার জন্য ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে; পূর্বে এটি ছিল ৫০০ ও ৬০০ টাকা।
পূর্ববর্তী ভাতা বৃদ্ধি ও প্রেক্ষাপট
এর আগে আগস্ট মাসে সরকার বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের বক্তা সম্মানী ও প্রশিক্ষণ ভাতার হার পুনর্নির্ধারণ করে। সেই সময় প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীদের উভয়ের ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। প্রশিক্ষার্থীদের ভাতা দ্বিগুণ করা হয়েছিল, আর প্রশিক্ষকদের ভাতা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এছাড়া জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীরা মূল বেতনের উপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। কর্মরতদের জন্য ন্যূনতম সুবিধা নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগী জন্য ন্যূনতম ৭৫০ টাকা।
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের গুরুত্ব
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ মূলত তাদের দক্ষতা ও জ্ঞানের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভাতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ আরও উৎসাহব্যঞ্জক হবে। কর্মকর্তারা মূল কাজের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং নীতি প্রণয়ন বিষয়ে সক্ষম হবেন।
এই উদ্যোগ সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়নের অংশ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। বিশেষ করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম।
ভাতা বৃদ্ধির প্রভাব
নতুন ভাতার হার বৃদ্ধির ফলে কর্মচারীরা প্রশিক্ষণে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারবে। কর্মকর্তাদের জন্য এটি আর্থিক উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করবে। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বৃদ্ধি কর্মীদের কর্মসংস্থানে সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করবে এবং সরকারি সেবার মান উন্নত করবে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
অর্থনীতি ও প্রশাসনিক বিষয়ক বিশ্লেষক ড. রাশিদা খাতুন বলেন, “ভাতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষক উভয়েই উৎসাহিত হবেন। এটি সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।”
তিনি আরও বলেন, “এই ভাতা বৃদ্ধির ফলে সরকারী কর্মচারীরা তাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবে, যা সরাসরি দেশের প্রশাসনিক দক্ষতা ও সেবার মানে প্রতিফলিত হবে।”
সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা ৪২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি দেশের প্রশাসনিক কাঠামোর দক্ষতা উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা নয়, বরং প্রশিক্ষণ গ্রহণে আরও বেশি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা ও সরকারি সেবার মান উন্নত হবে। দেশের প্রশাসনিক পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিত করবে।
এম আর এম – ১৪৩২,Signalbd.com