অনেক কাজ করেছি, যা দেশের ইতিহাসে হয়নি: আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অল্প সময়ে তিনি এমন অনেক কাজ করেছেন, যা দেশের ইতিহাসে হয়নি। তিনি আজ বিকেলে সিলেটের একটি হোটেলের হলরুমে ‘জারিকৃত আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫: মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “আমি ফুটবল প্লেয়ার নই, কিংবা মঞ্চনাটকের অভিনেতাও নই, আমি যেটা করব, আপনি দেখতে পারবেন।”
লিগ্যাল এইডের প্রসার
আসিফ নজরুল জানান, লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে যে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়, তা প্রচলিত আদালতের চেয়ে দ্রুত এবং কম খরচে হয়। সিভিল ও ক্রিমিনাল আদালত পৃথক করা হয়েছে, যাতে সিভিল মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।
তিনি বলেন, “প্রচলিত আদালতে যদি পাঁচ বছর লাগে, লিগ্যাল এইডে সেটি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সমাধান হয়। এতে ৯০ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট থাকে এবং পরবর্তীতে তারা কোর্টে যায় না।”
বিচারিক পদ সৃষ্টি ও সংস্কার
আইন উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আগে বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষমতা পলিটিক্যাল মন্ত্রীদের হাতে ছিল। এটি চিফ জাস্টিসের কাছে নেওয়া হয়েছে। সোয়া দুই শতাধিক বিচারকের পদ এক দিনে সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন করেছেন, যা আগে কখনো সমালোচিত হয়নি। এছাড়া, সারা বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত সৎ ও যোগ্য অফিসারদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কাজ করা হচ্ছে।
বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা
আসিফ নজরুল জানান, এখন দরিদ্র ও অসহায় মানুষ বিনামূল্যে এবং দ্রুততম সময়ে আইনগত সহায়তা পাবেন। আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী প্রথমে লিগ্যাল এইডে যেতে হবে, এরপর অসন্তুষ্ট হলে আদালতে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, “মানুষের হয়রানি কমবে, বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য এটি অপূর্ব সুযোগ।”
কার্যক্রমের উদ্বোধন ও প্রদর্শনী
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার আয়োজনে সিলেটে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ আশফাকুর রহমান, সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী এবং অন্যান্য প্রতিনিধি।
মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা সম্পর্কে নাটক প্রদর্শনের মাধ্যমে কার্যক্রমের কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়।
সিলেটে পরিদর্শন
সকালে সিলেটে পৌঁছে আসিফ নজরুল টিটিসি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে তিনি রাতারগুল পর্যটনকেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
তিনি সেখানকার কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যা ও সমাধান প্রক্রিয়ার বিষয়ে অবহিত হন।
আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সংক্ষিপ্ত সময়ে যে সংস্কার ও উদ্যোগ এনেছে, তা ইতিহাসে বিরল। লিগ্যাল এইডের প্রসার, আদালত পৃথককরণ, বিচারিক পদ সৃষ্টি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন দেশের আইন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সরকার এই সংস্কারগুলো ধরে রাখলে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ ন্যায়বিচার সহজলভ্য হবে।
এম আর এম – ১৩৯৫,Signalbd.com