বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় ৬ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম মহানগরীতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় ৬ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ বিভিন্ন ডাকাতির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ।

গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচিতি

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আসিফ, মো. হাসান, মো. ফয়সাল, আজিম উদ্দিন, মো. রিফাদ ও মো. জুয়েল। তারা নগরীর বায়েজিদ বোস্তামীসহ আশপাশের এলাকায় পথচারী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করতেন। তাদের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশি অভিযান ও উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম

নগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রইছ উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ছয়টি কিরিচ, দুটি চায়নিজ কুড়াল, দুটি কাটার, একটি ড্রিল মেশিনসহ ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

সাজ্জাদ হোসেনের অপরাধ ইতিহাস

সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের পরিচিত নাম। তিনি বিদেশে পলাতক শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। অপরাধ জগতে প্রবেশের পর থেকে তিনি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তবে পরের মাসেই তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ তাকে ধরতে গেলে তিনি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান।

স্থানীয়দের উদ্বেগ

স্থানীয়রা জানান, সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তারা নির্মাণাধীন ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে হামলা, গুলি বর্ষণ এমনকি খুন করতেও পিছপা হন না তারা। এভাবে বায়েজিদ ও চান্দগাঁও এলাকায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন তারা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে থানায়। সাজ্জাদসহ তার পলাতক সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ

চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য রোধে পুলিশ প্রশাসন আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।

সামাজিক সচেতনতা ও সহযোগিতা

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা অপরিহার্য। এ ধরনের অপরাধ দমনে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ আশা করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সন্ত্রাসী চক্রের কার্যক্রম বন্ধ হবে এবং নগরীতে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তুলতে। এ জন্য প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের সমন্বিত উদ্যোগ। বাংলাদেশ

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button