বাংলাদেশ

কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সতর্ক করলো দূতাবাস

Advertisement

কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে দোহায় অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস। ইসরায়েলের হামলার জেরে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দূতাবাস বাংলাদেশিদের অযথা বাইরে চলাফেরা না করার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত ছবি বা ভিডিও প্রচার থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে কী বলা হয়েছে

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দূতাবাস থেকে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, দোহায় ইসরায়েলের মিসাইল হামলার প্রেক্ষিতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। এ অবস্থায় অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া কাতারি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশটির সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটি মেনে চলতে আহ্বান করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামলার ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া কাতারের প্রচলিত আইনবিরোধী বলে সতর্ক করা হয়।

দূতাবাস আরও জানায়, জরুরি প্রয়োজনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দূতাবাসের হটলাইন নম্বর +৯৭৪ ৩৩৬৬২০০০ এবং ইমেইল [email protected]তে যোগাযোগ করতে পারবেন।

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান উত্তেজনা সাম্প্রতিক হামলার কারণে নতুন মাত্রা পেয়েছে। কাতার যদিও সরাসরি সংঘাতে জড়িত নয়, তবে দেশটির রাজধানী দোহায় হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সংঘাত বাড়লে সেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এ ধরনের সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এবারও একই ধারা অব্যাহত রেখে দূতাবাস সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিক্রিয়া

কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা দূতাবাসের এই নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এ ধরনের সতর্কতা তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয়।

একজন প্রবাসী জানান, “আমরা পরিবার নিয়ে এখানে থাকি। বাইরে পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে উঠলে দূতাবাসের পরামর্শ মেনে চলাই সবচেয়ে ভালো।”

আরেকজন বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভিডিও শেয়ার করতে চাইছে, কিন্তু আমরা জানি কাতারের আইন খুব কঠোর। তাই এসব থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।”

কাতারি সরকারের অবস্থান

কাতারি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই নাগরিক ও প্রবাসীদের পরিস্থিতি নিয়ে সচেতন থাকতে বলেছে। তারা জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে গুজব বা যাচাইহীন তথ্য প্রচার না করার জন্যও কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ দূতাবাসের নির্দেশনাও মূলত কাতারি সরকারের সেই বার্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞ মতামত

প্রবাসী বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের দ্রুত পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের মতো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির অঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের সবসময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, “দূতাবাসের এই নির্দেশনা বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার স্বার্থেই দেওয়া হয়েছে। কাতারে আইন খুব কঠোর, তাই ছোটখাটো ভুলও বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।”

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি

বর্তমান পরিস্থিতি কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে কাতারি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসও প্রবাসীদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

প্রবাসীদের এখন মূল কাজ হলো আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা।

ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে দোহায় সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি প্রবাসীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সতর্কবার্তা ও কাতারি সরকারের নির্দেশনা মেনে চললে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। এখন সবার অপেক্ষা, পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার।

এম আর এম – ১২৫৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button