বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার: মেস থেকে আত্মহত্যার সন্দেহ

রাজধানীর পুরান ঢাকার কাঠেরপুল এলাকার তনুগঞ্জ লেনের একটি মেস থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাবরিনা রহমান শাম্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে চারটার দিকে সূত্রাপুর থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার কথা জানালেও এর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।

ঘটনার বিবরণ

ওসি সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাবরিনা কাঠেরপুল এলাকার একটি মেসে একা থাকতেন। ভোররাতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং মেসের একটি কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সাবরিনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি তাঁর গ্রামের বাড়ি যশোরে নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকবার্তা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা জামান বলেন, “সাবরিনা অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহপাঠী এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাবরিনার মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করা হয়েছে।

আত্মহত্যার প্রাথমিক ধারণা

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে সাবরিনার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। তবে সাবরিনার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো বিষয় বা মানসিক চাপ এর কারণ হতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় মেসের অন্য বাসিন্দা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মেসবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক

এ ঘটনার পর কাঠেরপুল এলাকার তনুগঞ্জ লেনের মেসে বসবাসকারী অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মানসিক চাপ ও নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছেন।

পরিবারের বক্তব্য

সাবরিনার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি বরাবরই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তবে সম্প্রতি তাঁর আচরণে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ করা গিয়েছিল। পরিবার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার চেষ্টা করলেও এটি যে এমন পরিণতিতে যাবে, তা তাঁরা কল্পনাও করেননি।

সামাজিক দৃষ্টিকোণ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় পরিবারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়েরও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে কাউন্সেলিং এবং মানসিক সমর্থন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

পুলিশের তদন্ত অব্যাহত

সূত্রাপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনে মেসের বাসিন্দা এবং সাবরিনার পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button