নুরের মাথা, নাক ও চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে, বৈঠকে বসছে মেডিকেল বোর্ড

শুক্রবার রাতের সংঘর্ষে গুরুতর আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথা, নাক ও ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া মাথার ভেতরে সামান্য রক্তক্ষরণ দেখা দিয়েছে।
ঢামেকের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ শনিবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে জানান, “নুরুল হককে রাত ১১টা ২০ মিনিটে জরুরি বিভাগে আনা হয়। তখন তিনি রক্তাক্ত ছিলেন এবং নাকের ভিতরে গজ ব্যান্ডেজ দেওয়া ছিল। দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।”
নুরের শারীরিক অবস্থা: চোখ-মুখে ফোলা, অন্যান্য স্থানে আঘাত নেই
ডা. মোস্তাক আরও বলেন, “নুরের মাথার হাড়, নাকের হাড় এবং ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। যদিও মাথার ভেতরে রক্তক্ষরণ আছে, তা খুব সামান্য। চোখ-মুখে ফোলা রয়েছে এবং চোখেও কিছু রক্ত জমে আছে। তবে শরীরের অন্য কোনো স্থানে আঘাত দেখা যায়নি।”
তিনি জানান, রাতের সময় কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং সকালেও মাথার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে চিকিৎসকরা নুরের অবস্থার বিস্তারিত মূল্যায়ন করেছেন।
মেডিকেল বোর্ড গঠন, বৈঠকে বসছে চিকিৎসকরা
নুরের চিকিৎসা ও পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের জন্য ঢামেক কর্তৃপক্ষ একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। বোর্ডে রয়েছেন:
- নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক
- নাক-কান-গলা (ENT) বিভাগের চিকিৎসক
- চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক
- জরুরি (Casualty) বিভাগের চিকিৎসক
মেডিকেল বোর্ডের প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, নুরকে অপারেশন করার প্রয়োজন নেই, তবে এখনো তাঁকে সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। বোর্ড আজ বৈঠকে বসে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করবেন।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: শুক্রবার রাতের সংঘর্ষ
নুরুল হক নুর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতের সংঘর্ষে তিনি গুরুতরভাবে আহত হন। তবে সংঘর্ষের ঠিক কারণ এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় নুর হাসপাতালে আনার আগে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছিল। নাকের ভিতরে গজ ব্যান্ডেজ এবং অন্যান্য প্রাথমিক চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়েছিল।
চিকিৎসকের বক্তব্য: পরবর্তী পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ
ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, “নুরের চোখ, নাক এবং চোয়ালে আঘাত গুরুতর হলেও, এখনো জীবনহানির আশঙ্কা নেই। তবে, চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে মাথার ভেতরের রক্তক্ষরণ এবং চোখের অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “মেডিকেল বোর্ড নুরের চিকিৎসার পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। এতে সম্ভাব্য সার্জারির প্রয়োজন হলে তা করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে অপারেশনের প্রয়োজন নেই।”
চিকিৎসা সংক্রান্ত পরবর্তী করণীয়
নুরের চিকিৎসায় এখন যে বিষয়গুলো নজরদারি করা হচ্ছে তা হলো:
- মাথার ভেতরের রক্তক্ষরণ: সামান্য হলেও এটি কখনো কখনো জটিল রূপ নিতে পারে।
- চোয়াল ও নাকের হাড়ের অবস্থা: ফ্র্যাকচার পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন হতে পারে।
- চোখের ফোলা ও রক্ত জমা: চোখে প্রভাব দেখা দিলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
- সাধারণ শারীরিক অবস্থা: অন্যান্য আঘাত আছে কি না তা নিয়মিত চেক করা হচ্ছে।
গণমাধ্যম ও জনমত
নুরের আহত হওয়ার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক গণমাধ্যমে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। জনসমর্থকরা তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণঅধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে নুরের স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ
চিকিৎসকেরা পরিবার এবং গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নুরের শারীরিক অবস্থার নিরীক্ষণ এবং সঠিক চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁকে ICU তে রাখা হয়েছে যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মুহূর্তের মধ্যে মোকাবিলা করা যায়।
MAH – 12545, Signalbd.com