বাংলাদেশ

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত, ক্ষমা চাইবে পুলিশ: ফাওজুল কবির

Advertisement

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। পুলিশ প্রতিনিধি এ ঘটনায় ক্ষমা চাইবে। বুধবার রাতে শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পুলিশি মোকাবিলা

গতকাল বুধবার বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত দাবিসহ কোটা ও পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি, চাকরিতে সমতা এবং অধিকার সুরক্ষার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নেন।

বেলা ১১টার দিকে তারা শাহবাগের প্রধান সড়কে অবস্থান নেন, যা কয়েক ঘণ্টার জন্য এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে অগ্রসর হলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল মোড়ে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করে, এরপর লাঠিচার্জ চালানো হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।

ফাওজুল কবিরের মন্তব্য

বৈঠকে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, “কথায় কথায় যমুনা অভিমুখে যাত্রা অনভিপ্রেত। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এরজন্য ক্ষমা চাইবেন পুলিশের প্রতিনিধি।” তিনি আরও জানান, সরকারের গঠিত কমিটির বাকি পাঁচ সদস্য আগামীকাল শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য পুনরায় বৈঠক করবেন।

ফাওজুল কবির শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন যে সরকারের দরজা সবসময় আলোচনার জন্য খোলা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি ও নতুন পদ্ধতি

শিক্ষার্থীরা পূর্বে তিন দফা দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করছিল। এই কমিটি তাদের দাবি পূরণের জন্য গঠিত হলেও, শিক্ষার্থীরা কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুনভাবে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেছেন। এতে বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ উপাধি যুক্ত করা, পদোন্নতি এবং চাকরিতে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা অন্যতম বিষয়।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

পুলিশি হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে। শিক্ষার্থীরা আগামীদিনে শাহবাগে প্রেস ব্রিফিং করে তাদের অবস্থান এবং দাবি প্রকাশ করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সঙ্গে এই ধরনের পুলিশি মোকাবিলা সামাজিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। তবে সরকারের প্রতিশ্রুতিশীল পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের আস্থা পুনঃস্থাপন করতে সহায়তা করতে পারে।

বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সমাধান সংলাপের মাধ্যমে হওয়া উচিত। পুলিশি পদক্ষেপ পরিস্থিতি উত্তেজিত করতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নিলে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ন্যায্যতা এবং সমতা নিশ্চিত হবে।

শিক্ষাবিদরা বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অগ্রহণযোগ্য। এটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সংক্ষিপ্তসার

ফাওজুল কবিরের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের যে আচরণ হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয় এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হবে। পাশাপাশি সরকারের গঠিত কমিটি শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কাজ করবে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অধিকার রক্ষা ও সরকারের সহমর্মিতা এ আন্দোলনের ভবিষ্যত দিক নির্ধারণ করবে।

এম আর এম – ১০৭১, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button