ব্যারাক রুমে নারী কনস্টেবলকে ধর্ষণের অভিযোগ

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ ব্যারাকে এক নারী কনস্টেবলকে একই থানায় কর্মরত এক সহকর্মী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ লাইন ও থানায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ঘটনা সূত্র
ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আশুলিয়া থানা থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যোগদান করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত সাফিউর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য রমজানের ঈদের পরের দিন ভুক্তভোগীকে থানা ব্যারাকের রুমে ঢুকিয়ে ধর্ষণ করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, এ সময় নারী পুলিশ সদস্য রুমে একা ছিলেন। পরে ভিডিও ধারণ করে তাকে আরও একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।
অভিযোগ ও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া
ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবল অভিযোগ করেন, থানা পুলিশ পরিদর্শক আল আমিনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অভিযোগ, আল আমিনের বাড়ি অভিযুক্ত সাফিউরের এলাকায় হওয়ায় তিনি ঘটনাটি লিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন। ভুক্তভোগী বলেন, বিষয়টি প্রকাশ করার চেষ্টা করলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে হুমকি দিয়েছেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে প্রেম সম্পর্কের কথা থানার সকল পুলিশ কর্মকর্তা জানতেন। তবে তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী জানান, অভিযুক্ত ভিডিও ধারণ করে তাকে হুমকি দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে। তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখানো হলেও প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয়। অভিযোগ, মীমাংসার জন্য টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও রাখা হয়।
এই ধরনের অভিযোগ পুলিশের পেশাগত শৃঙ্খলা এবং নারী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুলিশ বাহিনীতে এমন ঘটনায় দ্রুত ও ন্যায্য তদন্ত অপরিহার্য।
তদন্ত প্রক্রিয়া
ঘটনার পর অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগী দুজনকেই পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এডিশনাল এসপির নজরে বিষয়টি আনা হলেও এখনও সম্পূর্ণ সমাধান হয়নি। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, পুরো বিষয়টি যাচাই-বাছাই চলছে। প্রেমঘটিত সমস্যা না কি অন্য কোনো বিষয় তা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক প্রভাব
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার ও নারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলো অভিযোগ তদন্তে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সাধারণ জনগণও পুলিশের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অপরাধীর দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। এই ধরনের ঘটনা সমাজে নারীদের আত্মবিশ্বাস এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ভবিষ্যৎ প্রক্রিয়া ও আশা
ঢাকা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে বিভাগীয় ও অন্যান্য আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। সামাজিকভাবে এই ধরনের ঘটনা লুকানো যায় না এবং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জোরদার পদক্ষেপ প্রয়োজন।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, পুলিশের এই ধরনের ঘটনায় দ্রুত ও ন্যায়সঙ্গত তদন্ত নারী কর্মীদের নিরাপত্তা এবং পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এম আর এম – ০৯৭৯, Signalbd.com