পাসপোর্ট ও ভিসা উইং কর্মকর্তাদের সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে কাজ করার আহ্বান

বাংলাদেশের প্রবাসী জনগণের জন্য পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সেবার মাধ্যমে তারা বিদেশে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা লাভ করেন। তাই, বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কর্মকর্তাদের সেবামূলক মনোভাব ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের প্রথম সচিব ও দ্বিতীয় সচিব পদায়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। মূলত তারাই রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে টিকিয়ে রেখেছে। আর এ প্রবাসীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ শ্রমিক শ্রেণির। সুতরাং, পাসপোর্ট ও অন্যান্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কর্মকর্তাদের তাদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার ও সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সিভিল সার্ভিসের মান সমুন্নত রাখতে হবে। কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে না। তা ছাড়া, কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিও করা যাবে না। দেশের মানসম্মান ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
ই-পাসপোর্ট চালু:
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) পুরোপুরি চালু করা হবে। তিনি বলেন, “বর্তমানে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দুর্নীতির মাত্রা অনেক কমেছে। তবে এটিকে শূন্য পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বিদেশি নাগরিক যারা ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন, তাদেরকে আগামী ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জন করতে হবে। অন্যথায় ৩১ জানুয়ারির পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পাসপোর্ট ও ভিসা সেবার মান উন্নয়ন:
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কর্মকর্তাদের সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রশিক্ষণ ও ওরিয়েন্টেশন: বিদেশে মিশনের নতুন কর্মকর্তাদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে তারা সেবার মান উন্নয়নে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
- ডিজিটালাইজেশন: পাসপোর্ট ও ভিসা সেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হচ্ছে, যাতে প্রবাসীরা সহজে ও দ্রুত সেবা পেতে পারেন।
- দুর্নীতি প্রতিরোধ: কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
- প্রবাসীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক: প্রবাসীদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখে তাদের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সেবার মান উন্নয়ন হলে প্রবাসীরা সহজে ও দ্রুত সেবা পাবেন, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কর্মকর্তাদের সেবার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। আশা করা যায়, এসব উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীদের সেবা আরও উন্নত হবে এবং বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।
MAH – 12372 , Signalbd.com