পদ্মা সেতু দিয়ে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ শুরু হলো খুলনা-ঢাকা রুটে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন “জাহানাবাদ এক্সপ্রেস” ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এটি সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ইয়েন উপস্থিত ছিলেন।
সময় ও দূরত্বে সাশ্রয়
নতুন এই রেলপথে খুলনা থেকে ঢাকা যাত্রায় সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। বর্তমানে অন্য রুটে এ যাত্রায় সময় লাগত সাড়ে ৯ ঘণ্টা।
এই নতুন ট্রেন যোগাযোগে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব ২০৮ কিলোমিটার। ট্রেনটি যশোর, নড়াইল, মধুমতি সেতু, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে।
নতুন ট্রেন ও সময়সূচি
রেলওয়ে বিভাগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী:
- “জাহানাবাদ এক্সপ্রেস”:
- খুলনা থেকে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে সকাল পৌনে ১০টায়।
- ঢাকা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে খুলনায় পৌঁছাবে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে।
- “রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস”:
- ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছাবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে।
- বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে বেনাপোল থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।
প্রতিটি ট্রেনে ১২টি কোচে ৭৬৮টি আসন রয়েছে।
ভাড়া নির্ধারণ
ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে:
- শোভন চেয়ার: ৪৪৫ টাকা
- স্নিগ্ধা: ৭৪০ টাকা
- এসি সিট: ৮৮৫ টাকা
- এসি বার্থ: ১,৩৩০ টাকা
সকল শ্রেণির ভাড়ার সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত হবে।
রেল যোগাযোগের উন্নয়ন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “রেলের লোকোমোটিভ ও কোচ সংকট থাকলেও সীমিত সম্পদ দিয়েই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, রেলকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করতে খরচ কমানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
নতুন রুট চালুর ফলে খুলনা, যশোর, নড়াইল, ফরিদপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় যাতায়াত আরও সহজ ও সময় সাশ্রয়ী হবে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবাহেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।