
আজ মধ্যরাত পর্যন্ত দেশের আটটি অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া, বজ্রবৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের আশঙ্কা। নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সম্ভাব্য ভূমিধস ও জলাবদ্ধতা নিয়েও সতর্কতা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, রাত ১টার মধ্যে দেশের আটটি অঞ্চলে ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এই পূর্বাভাসে জনসাধারণের জন্য বিশেষ সাবধানতার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রাত ১টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি গতিতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এই ঝড়ো বাতাসের সাথে মাঝারি থেকে ভারী মাত্রায় বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতও হতে পারে।
নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, যা নদীপথে চলাচলকারী নৌযান ও যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা বহন করে।
পূর্বের পরিস্থিতি ও কারণ
বর্তমানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং তা বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করছে। এই মৌসুমি বায়ুর কারণে সাধারণত বর্ষাকালে এই ধরনের বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের প্রবণতা দেখা যায়।
গত এক সপ্তাহ ধরেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গড় বৃষ্টিপাতের হার বাড়তে শুরু করেছে এবং এর ফলে আগাম সতর্কতা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রভাব ও ঝুঁকি
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অতি ভারী বর্ষণের ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।
এছাড়া ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল।
জনগণকে পরামর্শ:
- খোলা জায়গায় না থাকা
- বজ্রপাতের সময় বিদ্যুতের খুঁটি বা গাছপালা থেকে দূরে থাকা
- নদীপথে চলাচলকারীদের যাত্রা স্থগিত রাখা
আঞ্চলিক পরিস্থিতি
খুলনা ও বরিশাল বিভাগ:
গভীর রাত পর্যন্ত বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চল:
সমুদ্রের নিকটবর্তী হওয়ায় ঝড়ো বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব বেশি পড়তে পারে।
নোয়াখালী ও পটুয়াখালী:
ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নিচু এলাকায় পানি জমার সম্ভাবনা প্রবল।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবহাওয়া বিশ্লেষক ড. রাশেদুল ইসলাম বলেন,
“মৌসুমি বায়ু এ সময়ে বাংলাদেশে বেশ সক্রিয় থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বায়ুর বেগ ও আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, “পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো উচিত।”
“রাত ১টার মধ্যে ৮ অঞ্চলে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে — সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হচ্ছে”—আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশে বর্ষাকাল একদিকে কৃষি ও পরিবেশের জন্য আশীর্বাদ, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিও বয়ে আনে।
আজ রাতের সম্ভাব্য ঝড় ও বৃষ্টিপাত সেই দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব বহন করে।
সাধারণ মানুষের উচিত সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা, নিরাপদে থাকা এবং প্রয়োজন হলে নিকটস্থ প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া।
তবে, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ২৪ ঘণ্টা আরও কড়া সতর্কতা জারি হতে পারে — এমনটি আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশ্লেষকেরা।
এম আর এম – ০২৪৯, Signalbd.com